ঢাকা: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য সাম্প্রতিক নাশকতার ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। বিশেষ করে ব্লগার বা সাংস্কৃতিক কর্মীদের ওপর আঘাত হচ্ছে।
মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমণ্ডি রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীর বক্তব্য প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সৈয়দ আশরাফ বলেন, বিএনপি তো এখন ক্ষমতায় নেই। সময় আছে অনেক, তারপরও তারা রাজনীতিতে সময় দেয় না। মাঝে মাঝে আসে, একদিন দুই দিন কথা বলে। তিন মাস, চার মাস খবর থাকে না। বিএনপিকে খুঁজে পাওয়া যায় না। সরকারের ব্যর্থতা কিসের?
ওলামা লীগ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, আমাদের দলের পক্ষ থেকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পরিস্কার করে বলেছেন, ওলামা লীগ আমাদের কোনো সহযোগী সংগঠন নয়। তারা ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য দিলে এটা তাদের বিষয়। এখন অনেকেই আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করে।
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশে সর্ববৃহৎ নির্বাচন হলো ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। সেখানে কিছু কিছু ঘটনা আগেও ঘটেছে, এখনও কিছু ঘটছে। তবে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি যেটা জাতির জন্য চিন্তার কারণ কিংবা চ্যালেঞ্জ হবে। নির্বাচন শেষ হলে এটা মানুষ ভুলে যাবে। এ নির্বাচনের মাধ্যমে দল লাভবান হচ্ছে, রাজনীতি লাভবান হচ্ছে, সংবিধান লাভবান হয়েছে। এবারের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সবচেয়ে বেশি শান্তিপূর্ণ হচ্ছে। এর আগে মারামারি-কাটাকাটি সারা দেশেই ছিলো। এবার সেটা হয়নি। রাজনৈতিক শৃঙ্খলার কারণে সহিংসতা মিনিমাম পর্যায়ে নেমে এসেছে।
তিনি বলেন, সারা পৃথিবীর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয়। আমাদের এখানেই ছিলো ব্যতিক্রম। আমাদের দেশে এ ট্রেডিশন ছিলো না। শুধু জাতীয় নির্বাচন দলীয় হবে, অন্য নির্বাচনগুলো নির্দলীয়- এটা সামরিক শাসকদের মাথা থেকে এসেছে। তাদের উদ্দেশ্যে ছিলো, অরাজনৈতিক নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আহরণ শক্তিশালী হবে।
‘আমরা রাজনৈতিক নির্বাচন শুরু করেছি। আগামীতে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে দলীয়ভাবে সব নির্বাচন হবে। আরেকটা নির্বাচনের পর এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হয়ে যাবে’- বলেন তিনি।
সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, আগামী ৩০ মের মধ্যে ২৩, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভবনটি খালি করা হবে। আগামী জুন মাসে পুরনো ভবনটি ভেঙে নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে। ২ বছরের মধ্যে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হবে বলে আমরা আশা করছি।
তিনি বলেন, গত ৬ এপ্রিল আমাদের দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নতুন ভবনের নকশার অনুমোদন দিয়েছেন। সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে থাকা সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনগুলোকে আলাদা অফিস নিয়ে বর্তমান ভবনটি খালি করে দিতে হবে। বর্তমান ভবন খালি হওয়ার পর ভাঙার কাজ শুরু হবে। রাজউক অনুমোদিত নতুন ভবনের নকশা ও পাইলিংসহ সম্পূর্ণ কাজ সম্পন্ন করা হবে। আশা করছি, আগামী সেপ্টেম্বর মাসে মূল ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু করা যাবে।
এর আগে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত যৌথ সভায় দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক, ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, হাবিবুর রহমান সিরাজ, ফরিদুন্নাহার লাইলী, ডা. বদিউজ্জামান ভূঁইয়া ডাবলু, অসীম কুমার উকিল উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৬
এমএম/ এএসআর