সিরাজগঞ্জে নাজমুল ইসলাম নামে এক সবজি বিক্রেতাকে অপহরণ ও হত্যার দায়ে ছয়জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেকের ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে এক মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ মে) বেলা সোয়া ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ এম আলী আহমেদ এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা অনুপস্থিত ছিলেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার পারধুন্দিয়া গ্রামের মো. হায়দার আলীর ছেলে মো. খাজা মিয়া, একই উপজেলার হরিনাথপুর বিষপুকুর গ্রামের মৃত ময়েজ উদ্দিনের ছেলে মো. এনামুল, দরগাপাড়া গ্রামের মৃত মজিবর শেখের ছেলে মো. মোজাহিদ, পারধুন্দিয়া গ্রামের মো. হায়দার আলীর ছেলে মো. বসু, মাদারদহ পূর্বপাড়া গ্রামের আব্দুর রহমান প্রধানের ছেলে মো. সাইদুল ইসলাম ও একই জেলার সাঘাটা উপজেলার রামনগর (হাটবাড়ি) গ্রামের মো. নজরুল ইসলাম সরকারের ছেলে মো. মিলন সরকার।
আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট শাকিল মোহাম্মদ শরিফুর হায়দার (রফিক সরকার) এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১২ আগস্ট দিনগত রাত সোয়া ১টার দিকে সলঙ্গা থানাধীন হাটিকুমরুল গোলচত্বরের উত্তরে রূপসী বাংলা হোটেলের দক্ষিণে বটগাছের নিচ থেকে সবজি ব্যবসায়ী নাজমুল ইসলামের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত সবজি ব্যবসায়ী নওগাঁ জেলার বাসিন্দা। তিনি নওগাঁর চকগৌরী বাজার থেকে বিভিন্ন ধরনের সবজি কিনে ঢাকার আশুলিয়া থানাধীন বাইপাইল এলাকার একটি আড়তে বিক্রি করতেন। এ ঘটনায় নাজমুলের বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে সলঙ্গা থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলায় বাদীর বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১০ আগস্ট দুপুরে চকগৌরী হাট থেকে সবজি কিনে ট্রাকে উঠিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন নাজমুল। পরদিন ১১ আগস্ট সবজি বিক্রি শেষে ফেরার পথে গাজীপুর উপজেলার চন্দ্রা থেকে তাকে অপহরণ করা হয়। ১১ আগস্ট রাত ১২টার দিকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি নাজমুলের ফোন থেকে তার স্ত্রী রাবেয়া খাতুনকে ফোন দিয়ে অপহরণের কথা বলে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। ১২ আগস্ট সকাল ৭টায় টাকা পাঠানোর জন্য বিকাশ নম্বরও দেন। ওইদিন সকালেই মোহাম্মদ আব্দুল কুদ্দুস নামে একটি বেসরকারি সংস্থার ম্যানেজারের মাধ্যমে জানা যায় নাজমুলের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানা পুলিশ।
এই হত্যা মামলার তদন্ত শেষে সলঙ্গা থানা পুলিশ সাতজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণের জন্য মোট ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করে। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে দ্য পেনাল কোড, ১৮৬০ এর ৩৯৬ ও ৩৪ ধারার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন বিচারক। মামলার অপর আসামি সাইফুল ইসলাম ওরফে হাজী ছয়ফুল মারা যাওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
আরএ