কুষ্টিয়া: বেতন-ভাতা বৃদ্ধিসহ তিন দফা দাবিতে কুষ্টিয়া পৌরসভা গেটে ময়লা ফেলে কর্মবিরতি পালন করেছেন পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা।
রোববার (১৩ জুলাই) সকাল ১০টায় এ কর্মবিরতি পালন করা হয়।
পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা জানান, কুষ্টিয়া পৌরসভায় প্রায় ৪৮০ জন কর্মী কাজ করেন। একজন সাধারণ দিনমজুরের হাজিরা ৫০০ টাকা হলেও, ময়লা পরিষ্কারের মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করেও তারা প্রতিদিন পান মাত্র ২৭৫ টাকা। এই বৈষম্যের প্রতিবাদে এবং তিন দফা দাবির ভিত্তিতে তারা কর্মবিরতিতে যান ও পৌরসভা গেটে ময়লা ফেলে প্রতীকী প্রতিবাদ জানান।
তারা অভিযোগ করেন, এর আগেও পৌর কর্তৃপক্ষ তাদের দাবিগুলো বাস্তবায়নের আশ্বাস দিয়েছিল, কিন্তু তা কোনো দিন কার্যকর হয়নি।
কর্মবিরতিতে অংশ নেওয়া পরিচ্ছন্নতাকর্মী বাদল বলেন, এখানে আমাদের কোনো বোনাস দেওয়া হয় না। মাসে বেতন দিতেও কিস্তিতে দেয়। ৮ হাজার ৭০০ টাকা বেতন পাই, সেটা তুলে খাব নাকি কিস্তি দেব—বুঝি না। মাসে যতদিন কাজ করি, তার একদিনের বেতনও কেটে নেওয়া হয়।
আরেক কর্মী রাশেদ অভিযোগ করে বলেন, পৌরসভা আমাদের মানুষই মনে করে না। দিনের পর দিন বেতন নিয়ে ঝামেলা করে।
জীবন নামে এক কর্মী জানান, বেতন দেওয়ার দাবি আমরা আট মাস ধরে জানিয়ে আসছি, কিন্তু কোনো সমাধান হয়নি। তাই আমরা বাধ্য হয়েই কাজ বন্ধ করে আন্দোলনে নেমেছি।
পরিচ্ছন্নতাকর্মী বিকি দাশ বলেন, আমরাই শহর পরিষ্কার রাখি, অথচ আমাদের ঠিকমতো বেতন দেওয়া হয় না। অফিসের কিছু চক্র আবার কল করে হুমকি দিচ্ছেন, যেন আমরা আন্দোলনে না যাই। কিন্তু আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।
আন্দোলনকারীদের মধ্যে ঝন্টু নামের এক কর্মী বলেন, শ্রম অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত কোনো ফল পাওয়া যায়নি।
তবে শেষ পর্যন্ত পৌর কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে কর্মীরা কর্মবিরতি স্থগিত করেন।
কুষ্টিয়া পৌরস নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, বিষয়টি আসলে ভুল বোঝাবুঝি থেকে হয়েছে। জুলাই মাস থেকে তাদের বেতন বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে। তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে, দ্রুতই দাবি পূরণ করা হবে।
এসআরএস