ঢাকা, বুধবার, ১ শ্রাবণ ১৪৩২, ১৬ জুলাই ২০২৫, ২০ মহররম ১৪৪৭

সারাদেশ

প্রতীকের তালিকা থেকে ‘নৌকা’ বাদ দিতে হবে: হাসনাত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২:১৬, জুলাই ১৬, ২০২৫
প্রতীকের তালিকা থেকে ‘নৌকা’ বাদ দিতে হবে: হাসনাত বরিশালে জুলাই পথসভায় বক্তব্য দিচ্ছেন হাসনাত আবদুল্লাহ।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ভুলে যাবেন না শহীদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আপনি নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন। আপনি যদি ইনক্লুসিভ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে মিন করে থাকেন- হাসিনা গেছে যে পথে, আপনারাও যাবেন সে পথে।

আমরা দেখছি নির্বাচন কমিশনের আরও দ্বিচারিতা- সিম্বল অফ ফ্যাসিজম, নৌকাকে তারা আবার প্রতীক হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। অনতিবিলম্বে এই সিম্বল অব ফ্যাসিজম নৌকাকে তালিকাভুক্ত থেকে বাদ দিতে হবে।
 
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) রাতে বরিশাল নগরের ফজলুল হক অ্যাভিনিউতে বিচার সংস্কার ও দেশ পুনর্গঠনের লক্ষ্যে জুলাই পথসভায় একথা বলেন হাসনাত আবদুল্লাহ।
 
এসময় তিনি আরও বলেন, আমরা বর্তমান নির্বাচন কমিশনের দ্বিচারিতাও দেখতে পাচ্ছি। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের একজন কমিশনার যিনি অতীতে বিচারক ছিলেন উনি আমাদের মিটিং এ বলেন- আওয়ামী লীগ ছাড়া নাকি ইনক্লুসিভ নির্বাচন হবে না। আমরা দেখতে পাচ্ছি ভারত থেকে বলছে ইনক্লুসিভ নির্বাচন প্রয়োজন, ক্যান্টনমেন্ট থেকে বলছে ইনক্লুসিভ নির্বাচন প্রয়োজন, অনেক রাজনৈতিক দল বলছে ইনক্লুসিভ নির্বাচন প্রয়োজন, নির্বাচন কমিশন বলছে ইনক্লুসিভ নির্বাচন প্রয়োজন।
 
হাসনাত বলেন, আমরা রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রশ্ন রাখতে চাই, বিএনপিকে প্রশ্ন করতে চাই-আপনাদের যখন নির্বাচনের বাইরে রেখে নির্বাচন করেছিল তখন ইনক্লুসিভ নির্বাচনের বয়ান কোথায় ছিল? 

 
তিনি আরও বলেন, আমরা দেখলাম জনাব মির্জা ফকরুল সাহেব বললেন- যদি তারেক জিয়াকে নিয়ে কোনো কথা বলা হয়, যদি বিএনপিকে নিয়ে কোনো কথা বলা হয়, এটা নাকি গণতন্ত্রের জন্য হুমকি স্বরূপ। আপনাদের দীর্ঘ দেড় দশকের ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ের প্রতি সম্মান রেখে বলতে চাই-যখন কোনো ব্যক্তিকে বা দলকে প্রশ্নের ঊর্ধ্বে রাখা হয়, সমালোচনার ঊর্ধ্বে রাখা হয় সে ফ্যাসিবাদ হবে নিশ্চিত। সুতরাং রাষ্ট্রের ঊর্ধ্বে কোনো ব্যক্তি নয়, রাষ্ট্রের ঊর্ধ্বে কোনো দল নয়। রাষ্ট্রের মধ্যে প্রতিটি ব্যক্তির মনে রাখতে হবে আপনার কাছে যে রাজনৈতিক দলগুলো আসে, তারা আপনার সেবক হওয়ার জন্য আসে, তারা আপনার মালিক হওয়ার জন্য আসে না। যারা আপনার সেবা করবে তার জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার অধিকার বাংলাদেশের প্রত্যেকটি জনগণের রয়েছে।
 
হাসনাত বলেন, নির্বাচন কমিশনের আরও ত্রুটি রয়েছে-আমরা বলেছিলাম যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদের অবশ্যই সশরীরে এসে নির্বাচনী হলফনামা জমা দিতে হবে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি-কোন ষড়যন্ত্রের কারণে নির্বাচন কমিশন চাচ্ছে সশরীরে না এসেও যেন হলফনামা দেওয়া যায়, সেই ব্যবস্থা করতে।
 
হাসনাত বলেন,  আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, হুদা কমিশনের পরিণতি আপনারা ভুলে যাবেন না। নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন প্রয়োজন, এই সিলেক্টিভ নির্বাচন কমিশন দিয়ে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কোনোদিনও সম্ভব না। সূর্য পশ্চিম দিকে উঠতে পারে, আসমান জমিনে নামতে পারে কিন্তু এই নির্বাচন কমিশন দিয়ে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। এই নির্বাচন কমিশনকে বলতে চাই-আপনারা যদি আমাদের রেজিস্ট্রেশন এবং শাপলা প্রতীক নিয়ে গড়িমসি করেন আমরা রাজনৈতিকভাবে সেটি মোকাবিলা করবো।
 
এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের সঞ্চলনায় এসময় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
 
উপস্থিত ছিলেন এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহবায়ক সামান্তা শারমিন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারাসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা।
 
এর আগে রাত ৮টার দিকে ভোলা থেকে সড়কপথে বরিশালে আসেন এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা। নগরের অমৃত লাল দে কলেজের সামনের হাসপাতাল রোডে তাদের অভ্যর্থনা জানান বরিশালের নেতাকর্মীরা। সেখান থেকে পদযাত্রা শুরু করে সদর রোড হয়ে সভাস্থলে আসেন নাহিদ ইসলামসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
 
এমএস/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।