ঢাকা, সোমবার, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২, ২১ জুলাই ২০২৫, ২৫ মহররম ১৪৪৭

সারাদেশ

খুলনায় বিতর্কিতদের নিয়ে মাদ্রাসা রেজিস্ট্যান্স ডে উদযাপন!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪:৫৪, জুলাই ২১, ২০২৫
খুলনায় বিতর্কিতদের নিয়ে মাদ্রাসা রেজিস্ট্যান্স ডে উদযাপন!

খুলনা: খুলনা আলিয়া কামিল মাদ্রাসায় বিতর্কিতদের নিয়ে ‘মাদ্রাসা রেজিস্ট্যান্স ডে’ পালন করায় হট্টোগোলের সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার (২১ জুলাই) মাদ্রাসায় আয়োজিত স্মরণ সভা ঘিরে তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছেন ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা।

তাদের অভিযোগ, যারা সেই আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়ে জীবন বাজি রেখেছিলেন, আজকের আয়োজনে তাদেরকে বাদ দিয়ে উল্টো তৎকালীন বিরোধীদের— ছাত্রলীগপন্থী নেতা-কর্মী ও ফ্যাসিবাদী শিক্ষকদের মঞ্চে বসানো হয়েছে।

সকালে মাদ্রাসা চত্বরে অবস্থিত মডেল মসজিদ মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ড. মোঃ আব্দুর রহিম সরদার। উপস্থিত ছিলেন শিক্ষকবৃন্দসহ মাদ্রাসার বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।

জুলাই অভ্যুত্থনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, তাদের না জানিয়ে, সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়। অনুষ্ঠানে অংশ না নিয়ে তারা গেটের বাইরে অবস্থান নেন এবং ক্ষোভ জানিয়ে অনুষ্ঠান বর্জন করেন।

তারা জানান, তৎকালীন আন্দোলনে যারা শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে তাদের বের করে দিয়েছিল— সেই শিক্ষক মুহাদ্দিস মোঃ শামশের আলী শেখ ও মুহাদ্দিস আসাদুল্লাহসহ আরও কয়েকজন আজ মঞ্চে আসীন। এমনকি ছাত্রলীগের স্থানীয় নেতাদের দিয়েও অনুষ্ঠান পরিচালনা করা হয়েছে বলে অভিযোগ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অনুষ্ঠান শেষে ছাত্রলীগ নেতা আবু সাইদ খাবার নিয়ে যখন উপস্থিতদের মাঝে বিতরণ করছিলেন, তখন ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তাকে ধাওয়া করে লাঞ্ছিত করেন।

সহকারী অধ্যাপক মাওলানা জাফর উল্লাহ জানান, অনুষ্ঠানটি খুব দ্রুত আয়োজন করা হয়েছে, কিছু ভুলত্রুটি হয়ে থাকতে পারে।

অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) ড. মোঃ আব্দুর রহিম সরদার বলেন, একজন বিতর্কিত শিক্ষক মঞ্চে ছিলেন, এটা সত্য। তবে পরে শিক্ষার্থীদের কথা শোনা হবে।

‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ খুলনা জেলা ও মহানগরের সদস্যরা এ সময় বক্তব্য দেন এবং মঞ্চে থাকা ছাত্রলীগ নেতা হাবিবুল্লাহ, গাউসুল আজম, আবু সাইদসহ কয়েকজনকে চিহ্নিত করে গেটের বাইরে বের করে দেন।

উপস্থিত শিক্ষার্থীরা আক্ষেপ করে বলেন, যারা আমাদের নির্যাতন করেছিল, তারাই আজ শহীদদের নামে মঞ্চে বক্তৃতা দিচ্ছে। এটা শহীদদের আত্মার প্রতি অবমাননা।

সভায় বক্তারা বলেন, ২১ জুলাই শুধুমাত্র একটি তারিখ নয়, এটি সাহস, আত্মত্যাগ ও সত্যের প্রতীক। ইসলামী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে মাদ্রাসার ছাত্ররা অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন, তাদের রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল যাত্রাবাড়ীর পথ। শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

 

এমআরএম

 

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।