ঢাকা, রবিবার, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২, ০৩ আগস্ট ২০২৫, ০৮ সফর ১৪৪৭

সারাদেশ

ব্যবসায়ীকে বুকসমান বালুতে পুঁতে রেখে ৪ কোটি টাকা আদায়ের অভিযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:২১, আগস্ট ২, ২০২৫
ব্যবসায়ীকে বুকসমান বালুতে পুঁতে রেখে ৪ কোটি টাকা আদায়ের অভিযোগ অভিযুক্ত আসাদুজ্জামান জনি ও মফিজ উদ্দিন

যশোর: যশোরের অভয়নগরে এক ব্যবসায়ীকে মারধর করার পর অস্ত্রের মুখে বুকসমান বালুতে পুঁতে রেখে চার কোটি টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় গত ৩০ জুলাই অভয়নগর থানায় অভিযোগ দিতে গেলে তা নেওয়া হয়নি।

পরদিন ৩১ জুলাই স্থানীয় সেনা ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীর স্ত্রী আসমা খাতুন।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর নাম শাহনেওয়াজ কবীর টিপু। তিনি নওয়াপাড়ার জাফ্রিদী এন্টারপ্রাইজ নামে প্রতিষ্ঠানের মালিক। অভিযুক্তরা হলেন আসাদুজ্জামান জনি ও মফিজ উদ্দিন।

আসমা খাতুনের অভিযোগ, গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টার দিকে ব্যবসায়ী শাহনেওয়াজ কবীর টিপুকে সুকৌশলে আসাদুজ্জামান জনির অফিসে ডেকে নিয়ে যান সৈকত হোসেন হিরা নামে এক ব্যক্তি।

এ সময় আসাদুজ্জামান জনি ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীকে মারধর ও অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দুই কোটি টাকা দাবি করেন। এরপর সাউথ বাংলা ব্যাংক থেকে আসাদুজ্জামান জনির নিজ প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে দুই কোটি টাকা রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট (আরটিজিএস) করেন। টাকা পেয়ে ওইদিন ব্যবসায়ী টিপুকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এরপর ১৮ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টার দিকে ব্যবসায়ী শাহনেওয়াজ কবীর টিপু গ্রামের বাড়ি উপজেলার চলিশিয়া থেকে মোটরসাইকেলে বাজারে যাচ্ছিলেন। পথে হাসপাতাল গেট পার হলে সৈকত হোসেন হিরা তার গতিরোধ করেন। এরপর বিকেল ৩টা পর্যন্ত তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

পরে ভুক্তভোগীর পরিবার জানতে পারে, তাকে আসাদুজ্জামান জনির কনা ইকো পার্কে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ওইসময় বাদী সেখানে গেলে আসাদুজ্জামান জনি, সম্রাট হোসেন ও নওয়াপাড়া প্রেসক্লাবের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মফিজ উদ্দিন আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে মারধর, বুক পর্যন্ত গর্ত খুঁড়ে বালু চাপা দিয়ে আরও দুই কোটি টাকা দাবি করেন।

ব্যবসায়ী টিপু বাধ্য হয়ে তার ম্যানেজারকে ফোন করে টাকা দিতে বলেন। এরপর মফিজ এন্টারপ্রাইজের পূবালী ব্যাংক থেকে ৬৮ লাখ ও সাউথ বাংলা ব্যাংক থেকে ৩২ লাখ টাকা আরটিজিএস মারফত পাঠানো হয়।

ওইসময় মফিজ আরও এক কোটি টাকার চেক আদায় করে জনির নামে ক্রয়কৃত তিনটি ও দিলিপ সাহার নামে কেনা তিনটি মিলিয়ে মোট ছয়টি ১০০ টাকার ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে কাউকে কিছু বললে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন।

আসমা খাতুন তার লিখিত অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, আমি ৩০ জুলাই বিকেলে অভয়নগর থানায় গেলেও ওসি অভিযোগটি গ্রহণ করেননি। সে কারণে পরদিন স্থানীয় সেনা ক্যাম্পে অভিযোগটি জমা দেই।

অভিযোগের বিষয় জানতে শুক্রবার রাত ও শনিবার সকালে কয়েক দফা ফোনকল দেওয়া হলেও আসাদুজ্জামান জনির নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।

ঘটনার বিষয়ে জানতে নওয়াপাড়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মফিজ উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল নম্বরও বন্ধ পাওয়া যায়।

আসাদুজ্জামান জনি সংগঠনবিরোধী কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে সম্প্রতি তার নওয়াপাড়া পৌর বিএনপির সাংগঠনিক পদ স্থগিত রেখেছে দল।

অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আলিম বলেন, আসমা খাতুন আমার কাছে কোনো অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।