ঢাকা, বুধবার, ২৫ ভাদ্র ১৪৩২, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

সারাদেশ

গ্রাম থেকে শহরে এসে ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে কাঁদলেন মা, চাইলেন নিরাপত্তা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪:৪৭, সেপ্টেম্বর ৯, ২০২৫
গ্রাম থেকে শহরে এসে ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে কাঁদলেন মা, চাইলেন নিরাপত্তা

যশোর: মানববন্ধনে যশোরে এসে কাঁদলেন মণিরামপুর উপজেলার হাকোবা গ্রামে চাঁদাবাজদের হাতে নিহত ভ্যানচালক মিন্টু হোসেনের মা। খুনিদের বিরুদ্ধে মামলা করায় তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

তিনিসহ পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, স্থানীয় একজন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার শেল্টারে মামলার প্রধান আসামি বড় সাব্বিরকে বাঁচানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। নিহতের পরিবারকে দেওয়া হচ্ছে নানা ধরনের হুমকি-ধামকি।

মানববন্ধনে মা আমেনা বেগম বলেন, ‘যারা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে আমি মা হয়ে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি’।  

‘ছেলে হত্যার ঘনটায় আমি মামলা করায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। মামলা প্রত্যাহারের জন্য তারা আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকির মধ্যে রেখেছে’-বলেন আমেনা বেগম।

এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী বড় সাব্বিরের নেতৃত্বে মণিরামপুরের হাকোবা গ্রামে ভ্যানচালক মিন্টু হোসেনসহ পরিবারের পাঁচজন সদস্যকে চাঁদার দাবিতে গত ২৮ আগস্ট কুপিয়ে আহত করে দুর্বৃত্তরা। তাদেরকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে আসার পর মিন্টুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করেন চিকিৎসক। সেখানে তিনি ২৯ অক্টোবর মারা যান।  

ওই হত্যা মামলার প্রধান আসামি বড় সাব্বিরসহ খুনের সাথে জড়িত সকলের সর্বোচ্চ শাস্তি ও বাদী পরিবারের নিরাপত্তার দাবিতে মঙ্গলবার (০৯ সেপ্টেম্বর) প্রেসক্লাব যশোরের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

অসহায় পরিবারটির পক্ষ থেকে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হলেও এলাকার অনেক সাধারণ মানুষও অংশ গ্রহণ করেছিলেন।

মানববন্ধনে নিহতের শ্যালক সুমন রহমান অভিযোগ করেন, মামলার প্রধান আসামি একটি রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতার অনুসারী। ওই নেতার মাধ্যমে তিনি মামলাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছেন।  

ওই নেতা একটি দলের উপজেলা পর্যায়ের একজন প্রভাবশালী নেতার ছোট ভাইও। তিনি মামলার বাদী নিহতের মা আমেনা বেগমসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের হুমকি দিচ্ছেন। এমনকী কয়েকদিন আগে নেতার অনুসারীরা ভীতি সৃষ্টির উদ্দেশ্যে নিহতের বাড়িতে গভীর রাতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন বলেও অভিযোগ করেন সুমন রহমান।  

তার অভিযোগ, মামলার এজাহার থেকে প্রধান আসামি বড় সাব্বির হোসেনের পিতার নামও পরিবর্তন করা হয়েছে পরিকল্পিতভাবে।  

নিহতের স্ত্রী জেসমিন বলেন, ‘স্বামী হত্যার পর আমার দুই শিশু সন্তানসহ পরিবারের সকল সদস্য আতঙ্কের মধ্যে আছি’।  

তিনিও অভিযোগ করেন, তার স্বামী হত্যার প্রধান আসামি বড় সাব্বির হোসেন প্রভাবশালী একজন রাজনৈতিক নেতার অনুসারী। ওই নেতা ও তার লোকজন সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে মামলা প্রত্যাহারের জন্য তাকে এবং তার শ্বশুর-শাশুড়িকে বিভিন্ন সময় হুমকি দিচ্ছেন।  

নিহতের ভাই সেন্টু হোসেন বলেন, ‘সন্ত্রাসী সাব্বির হোসেন আমাকের কুপিয়ে জখম করে। আমিও আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। বাড়ি ফিরে আমিও নিরাপদ না। মামলা প্রত্যাহার না করলে তারা আবার আমাদের বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারে’।  

এসএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।