চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম নগরের পাচঁলাইশে ৫০ লাখ টাকা যৌতুক না পেয়ে এক গৃহবধূকে নির্যাতন ও গর্ভপাতের অভিযোগে তার স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ির নামে মামলা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে-৭ এর বিচারক ফেরদৌস আরার আদালতে এ মামলা করেন ওই গৃহবধূ।
মামলার বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. খোরশেদুল আলম সিকদার বাংলানিউজকে বলেন, ট্রাইব্যুনালে মামলার আবেদন করা হলে বাদীর বক্তব্য গ্রহণ করে পাচঁলাইশ থানাকে তদন্ত করে সাত দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনার পাশাপাশি নগরের পাচঁলাইশ থানার পাঁচলাইশ হাউজিং সোসাইটি এলাকায় আসামিদের বাসার ওপরের ফ্ল্যাটের বাসিন্দার এক শিশুকে পড়াতেন। পরে বাদীর বাসায় বিয়ের প্রস্তাব গেলে তিনি জানতে পারেন যে, আসামিরা তার টিউশনে যাওয়া-আসার সময় দেখে খোঁজখবর নিয়ে বিয়ের প্রস্তাব এনেছেন। প্রস্তাবের সময় আসামিরা বলেন, তাদের কোনো দাবি-দাওয়া নেই এবং স্বর্ণালংকার ও ফার্নিচার কিছুই লাগবে না। ছেলে চাকরি করে ও বিয়ের পর তাকে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ দেওয়া হবে।
গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর ১৫ লাখ টাকা দেনমোহরে তরুণীর সঙ্গে আসামি ফাহিম আহমদের বিয়ে হয়। ৩শ অতিথি আপ্যায়নসহ সবমিলিয়ে খরচ হয় সাত লাখ টাকা। শ্বশুর-শাশুড়িকে ‘খুশি করার জন্য’ ১০ ভরি স্বর্ণ ও সেগুন কাঠের ফার্নিচার দাবি করতে থাকেন স্বামী। এ দাবি না মানায় ওই গৃহবধূ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়। একপর্যায়ে তার পড়াশোনা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
১৭ মার্চ রাত সাড়ে ১১টার দিকে ৫০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন তার স্বামী ফাহিম। এতে অপারগতা প্রকাশ করলে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে আসামিরা তাকে মারধর করেন। তার স্বামী তলপেটে লাথি মারেন এবং শ্বশুর ও শাশুড়ি মিলে কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। এতে আহত হলে অনুরোধ করা সত্ত্বেও কেউ হাসপাতালে নেননি। তিনি একাই রিকশায় ন্যাশনাল হাসপাতালে গেলে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানে চিকিৎসা নেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৩ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২৫
এমআই/টিসি/এএটি