নির্মাতা মোস্তফা সারোয়ার ফারুকী তার দেওয়া পোস্টে লিখেছেন,‘এ রকম যাদের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, ইতিহাস চেতনা, আর ডিটারমিনেশন, তাদেরকে ট্রাক উঠিয়ে, মাস্তান পাঠিয়ে, পুলিশ দিয়ে কোনও ভাবেই দাবায়ে রাখা সম্ভব না। সরকারের উচিত দোষীদের শাস্তি, শাজাহানকে বরখাস্তের পাশাপাশি দ্রুত সড়ক পরিবহন নীতিমালা যুগপোযোগী করার লক্ষ্যে উচ্চপর্যায়ের কমিটি করা।
অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা ছাত্রদের বিক্ষোভের কয়েকটি ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘সাবাস বাংলাদেশ। জ্বলে পুড়ে ছারখার, তবু মাথা নোয়াবার নয়!’
অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী লিখেছেন, ‘হোক প্রতিবাদ। বিচার চাই। ’
অভিনেত্রী শাহানাজ খুশি লিখেছেন, ‘দয়া করে বাচ্চাদের গায়ে হাত দেবেন না। তারা কোন আসনের নমিনেশন পাবার জন্য পথে নামে নাই, তাদের দাবি পথের নিরাপত্তা কেবল। এই দেশের পরবর্তী কর্ণধার এই বাচ্চারাই। এখনো অনেক বাচ্চা হসপিটালে, জখম গুরুতর। বাচ্চাদের মাথায় লাঠির আঘাত নয়, ভরসার আর ভালোবাসার হাত রাখুন। মা-বাবাদের পথে নামতে বাধ্য করবেন না দয়া করে। ওরা আমাদের সন্তান। নাড়ি ছেঁড়া ধন! জারজ নয়!’
মেহের আফরোজ শাওন বলেন, ‘ওরা কিন্তু রাজনীতি বোঝে না, রাজনীতি করতে পথে নামেনি। কিন্তু রাজনীতির প্রতি, রাজনীতিবিদদের প্রতি কী পরিমাণ ঘৃণা জন্মে যাবে তাদের মনে, ভেবে দেখছেন! এই ছেলেরাই আগামী ২/১ বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে, হয়তো ছাত্র রাজনীতিও করবে। আজকের এই ঘৃণা ওদের ছাত্রলীগের রাজনীতি করতে দেবে? প্রধানমন্ত্রী, তিনি তো কোমল হৃদয়ের মানুষ, সারা জীবন সেভাবেই দেখে এসেছি তাকে। আজ কেন তার কোমলতা দেখাতে দেরি করছেন? তার সম্বন্ধে এই বাচ্চাগুলোর ধারণা কোন দিকে যাচ্ছে!’
অভিনেত্রী সোহানা সাবা লিখেছেন, ‘আমার বাবা আর বড় চাচ্চুকে ট্রেনিং এর জন্য ইন্ডিয়া পার করে দিয়ে আসেন আমার দাদুভাই৷ বাড়িতে এসে আমার দাদুভাই কান্নায় ভেঙে পড়েন৷ কারণ ট্রেনিং শেষে ছেলেরা দেশে আসবে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করতে, হয়তো ছেলেরা আর ঘরে ফিরবে না। হয়তো এটাই শেষ দেখা৷ আমার বাবা তখন ক্লাস এইটের ছাত্র, ৫ ভাই ও ৪ বোনের মধ্যে তিনি সেজো৷ আমার বাবা সাহসের সাথে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করে ঘরে ফিরেছিলেন। তবুও বাবার চেয়ে আমি বেশি অহংকার করি দাদুভাই ও দিদুমনিকে নিয়ে৷ এই দুই মহৎপ্রাণ মানুষ দেশের জন্য প্রাণপ্রিয় ছেলেদের বলি দিতেও প্রস্তুত ছিলেন। আজকেও বাচ্চাবাচ্চা ছেলেমেয়েদের চেয়ে বেশি ধন্যবাদ জানাবো তাদের বাবা-মা'কে। আমার ছেলের বয়স এখনও ৪ বছর হয়নি৷ সে আরেকটু বড় হলে আমিও তাকে আন্দোলনে পাঠাতাম। হতাম দেশের জন্যে জীবন বাজি রাখা ছেলের অহংকারী 'মা'! অবশ্যই পাঠাতাম। ’’
পরিচালক মাবরুর রশিদ বান্নাহ বলেছেন, ‘আজ না হয় শহরের স্কুল-কলেজের ছাত্রগুলো রাস্তায় নেমেছে, এতেই এই অবস্থা! কাল যদি সারা বাংলাদেশের স্কুল-কলেজের ছেলেমেয়েরা রাস্তায় নামে, তখন কেমন হবে!’
অভিনয়শিল্পী জ্যোতিকা জ্যোতি বলেছেন, ‘আর ঘরে বসে থাকা যায় না, আমার মন উত্তাল তোমাদের সঙ্গে। আপনি আছেন তো?’
গত ২৯ জুলাই বিমানবন্দর সড়কে দুই বাসের রেষারেষিতে একটির চাপা পড়ে শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই ছাত্র-ছাত্রীর মৃত্যু হয়।
এরপর থেকেই নিরাপদ সড়ক ও ওই দুর্ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিসহ ৯ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করছেন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, আগস্ট ০১, ২০১৮
বিএসকে/এমএ