মস্কো: বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ ও দীর্ঘদিন গোপন রাখা মহাকাশ বিপর্যয়ের ৫০ বছর পালন করেছে রাশিয়া। কাজাখস্তানের বাইকোনুর মহাকাশকেন্দ্রের রকেট উৎক্ষেপণ মঞ্চে সংঘটিত ওই দুর্ঘটনায় ১২৬ জন জীবন্ত পুড়ে মারা যান।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতিযোগিতার দৌঁড়ে এগিয়ে থাকতে সোভিয়েত ইউনিয়ন আন্ত:মহাদেশীয় দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতে নামে।
১৯৬০ সালের ২৪ অক্টোবর আর-১৬ নামের ওই ক্ষেপণাস্ত্রটি উৎক্ষেপণের দিন ধার্য হয়। ওইদিন উৎক্ষেপণ-মঞ্চে ক্ষেপণাস্ত্রটি বিস্ফোরিত হয়ে এই ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ঘটে।
রাশিয়ার মহাকাশ সংস্থা ’রসকসমস’ জানায়, জীবন্ত দগ্ধ হয়ে এতগুলো মানুষ ভয়াবহ যন্ত্রণা ভোগ করে মারা যায়। কিন্তু এই ভয়াবহ এ বিপর্যয় ও এর শিকার বীরদের কথা দেশবাসী এবং বাকি বিশ্বের কাছে দীর্ঘ দীর্ঘ কাল অজানাই থেকে গিয়েছিল। ’
রোববারের বার্ষিকীকে সামনে রেখে সংস্থা থেকে আরও বলা হয়, মহাকাশ গবেষণার ইতিহাসে এটি সবচেয়ে ভয়াবহ বিয়োগান্তক ঘটনা হিসেবে বিবেচিত। ’
পশ্চিমারা একে নেদেলিনের বিপর্যয় বলে উল্লেখ করে থাকে। কেননা ওই রকেট কর্মসূচির নকশাকরী ও পরীক্ষকসহ তত্ত্ববধানের দায়িত্বে থাকা রাশিয়ার কৌশলগত ক্ষেপণাস্ত্র বাহিনীর কমান্ডার মিতরোফান নেদেলিনও এ দুর্ঘটনায় নিহত হন।
নিকিতা ক্রুশ্চেভের নেতৃত্বে সোভিয়েত কর্তৃপক্ষ এ দুর্ঘটনার ব্যাপারে দীর্ঘকাল গোপনীয়তা বজায় রাখে। ১৯৯০ সালে দুর্ঘটনার তথ্য প্রথম প্রকাশ করা হয়।
কাকতালীয়ভাবে তিন বছর পরের একই দিনে উৎক্ষেপণমঞ্চে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় আরও সাত পরীক্ষক নিহত হন।
ফলে ২৪ অক্টোবর দিনটিকে মহাকাশ গবেষণার ‘কালোদিন’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। একই সঙ্গে রুশ কর্তৃপক্ষ মহাকাশ কর্মসূচির জন্য জীবন উৎসর্গ করা সবার স্মৃতি রক্ষার্থে ওই দিন স্মরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকেন।
১৯৬১ সালে মহাকাশে প্রথমবারের মত মানুষ পাঠানো এবং এর চার বছর আগে প্রথম স্পুটনিক স্যাটেলাইট প্রেরণ সোভিয়েত মহাকাশ কর্মসূচীর গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময়: ১৫৪১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১০