ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের গুপ্তচরবৃত্তি ঠেকাতে শেষ পর্যন্ত টাইপরাইটারেরই আশ্রয় নিতে যাচ্ছেন জার্মানির পার্লামেন্টের সহকারীরা।
সম্প্রতি জার্মান টেলিভিশন চ্যানেল দাস এর্স্তে’তে একটি অনুষ্ঠানে এমনটিই জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা এনএসএ’র জার্মানির ওপর নজরদারির ঘটনা তদন্তে গঠিত পার্লামেন্ট বুন্দেস্তাগ কমিটির প্রধান প্যাট্রিক সেন্সবার্গ।
পার্লামেন্ট ও সরকারের তথ্য সংরক্ষক সহকারীরা টাইপরাইটার ব্যবহারে যাচ্ছেন কিনা এমন এক প্রশ্নের উত্তরে ‘হ্যাঁ’ বলে সেন্সবার্গ উল্লেখ করেন, তার কমিটি ইতোমধ্যে একটি টাইপরাইটার যন্ত্র পেয়ে গেছে, যেটা অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ- যেমন কডিফাইড (বিধিবদ্ধ) ই-মেইল চালাচালি ও ক্রিপ্টো (গুপ্ত বা সংকেতপূর্ণ) টেলিফোন যোগাযোগের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে।
সেন্সবার্গ জোর দিয়ে বলেন, আমাদের উচিত অভ্যন্তরীণ যোগাযোগে গোপনীয়তা রক্ষা করা। এক্ষেত্রে আমাদের গৃহীত পদক্ষেপগুলো এখনই প্রকাশ করতে চাইছি না। তবে এনক্রিপটেড ই-মেইল ও ক্রিপ্টো টেলিফোনের ব্যবহার শুরু করতে যাচ্ছে জার্মান পার্লামেন্ট।
জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেলের ফোনালাপের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর গোপন নজরদারির খবর গত বছরের অক্টোবরে ফাঁস হয়ে গেলে ওয়াশিংটনের সঙ্গে বার্লিনের কূটনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হয়।
রুশ বার্তা সংস্থা ইতার-তাসের মতে, কেবল মার্কেলই নন, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জার্মান পার্লামেন্ট বুন্দেসতাগের ইলেকট্রনিক ডিভাইস নির্ভর কার্যক্রমেও গুপ্তচরবৃত্তি চালিয়ে যাচ্ছে।
চলতি মাসের শুরুর দিকে জার্মানির কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফআইএসজি’র একজন কর্মকর্তা ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের আরও এক কর্মকর্তাকে মার্কিন গোয়েন্দবৃত্তির দায়ে চাকরিচ্যুত করা হয়।
এতোসব কেলেঙ্কারি ও টানাপোড়েনের পরও জার্মানির সঙ্গে গোয়েন্দা কার্যক্রমে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক বৃদ্ধির আগ্রহ প্রকাশ করে মার্কেলের সঙ্গে কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
তবে, ওবামার আশ্বাসও স্বস্তি ফেরাতে পারছে না বার্লিন সরকারে। শেষ মেষ টাইপরাইটারসহ গুপ্তচরবৃত্তি এড়ানো যায় এমন যন্ত্রে নির্ভরশীল হয়ে কার্যক্রম চালাতে যাচ্ছে ইউরোপের তৃতীয় পরাশক্তি রাষ্ট্রটি।
বাংলাদেশ সময়: ০৬২৮ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১৪