ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২, ১৫ জুলাই ২০২৫, ১৯ মহররম ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

কার হাতে যাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০:১৬, অক্টোবর ৮, ২০১৫
কার হাতে যাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার? ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: কাজের স্বীকৃতি সবসময়ই কাঙ্খিত। আর সে স্বীকৃতি যদি পাওয়া যায় নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্তীর মধ্য দিয়ে, তাহলে তো জীবন সার্থক।

প্রতিবছরই অক্টোবর মাস আসলেই নোবলে পুরস্কারকে ঘিরে জল্পনা-কল্পনা যেন আকশ ছোঁয়। এবারও এর ব্যতিক্রম নয়। এরই মধ্যে চিকিৎসা, পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নে ঘোষিত হয়ে গেছে নোবেলজয়ীদের নাম। এরই ধারায় শুক্রবার (০৯ অক্টোবর) জানা যাবে, কার হাতে যাবে নোবলে শান্তি পুরস্কার।

মানবসভ্যতায় বিশেষ অবদানের জন্য ছয়টি শাখায় দেওয়া হয়ে থাকে নোবেল পুরস্কার। এগুলো হলো- পদার্থবিদ্যা, রসায়ন শাস্ত্র, চিকিৎসা, সাহিত্য, শান্তি ও অর্থনীতি। এর মধ্যে প্রতি বছরের মতো এবারও ১০ ডিসেম্বর স্টকহোমে আড়ম্বরপূর্ণ এক অনুষ্ঠানে সুইডেনের রাজা পাঁচটি শাখায় (শান্তি পুরস্কার বাদে) নোবেল বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন। আর একইদিন নরওয়ের অসলোতে দেওয়া হবে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার।

বর্তমান সময়ে সারাবিশ্বেই বিভিন্ন ইস্যুতে চলছে দ্বন্দ্ব-সংঘাত, লড়াই। কোথাও স্বাধীনতার সুবাতাস পেতে চলছে রক্তপাত, কোথাওবা একটু সুন্দর জীবনের খোঁজে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উত্তাল সাগরে ভাসানো হচ্ছে নৌকা। আবার কোথাও স্বাধিকারের দাবিতে চলছে আন্দোলন। কেউ আবার পরমাণু অস্ত্রের বিরুদ্ধে চালাচ্ছেন প্রচারণা। এবারের নোবেল শান্তি পুরষ্কার নিয়ে আলোচনার ক্ষেত্রে তাই চলে আসছে অনেকগুলো বিষয়, বেশ কয়েকটি নাম।

এরই মধ্যে কানে কানে ভেসে বেড়াচ্ছে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মের্কেল ও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির নাম। ইউরোপের রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে জার্মানি যেভাবে শরণার্থীদের দিকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে, তাতে অ্যাঙ্গেলা মের্কেলের হাতেই অনেকে দেখতে পাচ্ছেন এবারের শান্তি পুরস্কার।

পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব অসলো’র (পিআরআইও) প্রধান ক্রিস্টিন বার্গ হার্পভিকেনের পছন্দের শীর্ষে রয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর। তার মতে, শরণার্থী মোকাবেলায় অ্যাঙ্গেলা মের্কেল সত্যিকার অর্থেই অনুসরণীয় পদক্ষেপ নিয়েছেন।

এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান হিসেবে সামনে চলে আসতে পারে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) নামও। তবে প্রতিষ্ঠানটি ১৯৫৪ সালে ও ১৯৮১ সালে শান্তিতে নোবেল জয় করেছে।

এদিকে, ইরানের সঙ্গে ঐতিহাসিক পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষরসহ বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় জন কেরির অবদানকেও অস্বীকার করার উপায় নেই। সিরিয়া, ইরাক ও আফ্রিকাজুড়ে শান্তিপ্রতিষ্ঠায় তিনি অবসরহীন কাজ করে যাচ্ছেন।

সুইডেনের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী কার্ল বিল্ডট’র দৃষ্টি এবার জন কেরির দিকেই। মতামত জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, আমার মনে হয়, এবার নোবেল কমিটির জন্য বিজয়ী নির্বাচনের কাজ আগের যেকোনো সময়ের তূলনায় বেশি সহজ হয়েছে।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নোবেল শান্তি পুরস্কার যদি জন কেরির হাতে ওঠে, তাহলে সে পুরস্কারে অবশ্যই ভাগ বসাবেন ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ। কারণ পরমাণু চুক্তি ইস্যুতে তার অবদানও অস্বীকার করার উপায় নেই।

সুইডেনের আপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পিটার ওয়ালেনস্টিন তালিকায় যোগ করতে চাইছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্র নীতি বিষয়ক বিভাগের প্রধান ক্যাথেরিন অ্যাশটনকেও।

নোবেল শান্তি পুরস্কারের দৌড়ে এ বছর আরও কয়েকটি নাম রয়েছে। এদের মধ্যে সবার আগে চলে আসে পোপ ফ্রান্সিসের নাম। সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় তার যে তৎপরতা, তা কিছুতেই উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এছাড়া কঙ্গোর চিকিৎসক ডেনিস মুকউইগের নামও উচ্চারিত হচ্ছে বেশ জোরেশোরে। ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোয় হাজার হাজার ধর্ষিতা নারীকে চিকিৎসাসেবা দেওয়ায় মানবতাবাদীরা তার হাতেই দেখতে পাচ্ছেন নোবেল শান্তি পুরস্কার।

এছাড়া রাশিয়ার কয়েকজন অ্যাক্টিভিস্ট ও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানও নোবেল শান্তি পুরস্কারের দৌড়ে রয়েছে বলে মনে করছেন অনেক বিশেষজ্ঞ। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের একনায়ক শাসনকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে এই ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো। এদের মধ্যে অ্যাক্টিভিস্ট সভেতলানা গান্নুশকিনা ও লিউদমিলা অ্যালেক্সেয়েভা কিংবা সংবাদপত্র নোভায়া গাজেতার নাম উল্লেখযোগ্য।

তবে এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না, আসলে কার হাতে উঠতে যাচ্ছে নোবেল শান্তি পুরস্কার। গত ৫০ বছর ধরে নোবেল কমিটি মনোনয়নপ্রাপ্তদের তালিকা গভীর গোপনীয়তার সঙ্গেই সামলে এসেছে। কাজেই ঘোষণার আগে কিছুতেই নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়, এ দৌড়ে কে তালিকায় রয়েছেন বা এগিয়ে রয়েছেন।

জানা গেছে, প্রাথমিক আহ্বানে চলতি বছর ২৭৩ জনের একটি তালিকা পেয়েছে নোবেল কমিটি। এবার শুক্রবারের অপেক্ষ। সেদিন বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টায় নোবেল কমিটি ঘোষণা করবে ২০১৫ সালে শান্তিতে পুরস্ক‍ারজয়ীর নাম।

বাংলাদেশ সময়: ০০১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০১৫
আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।