উরির হামলার পর একদিকে পাকিস্তানকে কড়া জবাব দিতে মোদির ওপর রয়েছে সমর্থক অনুগামীসহ সামরিক নেতৃত্বের অপরিসীম চাপ। অপরদিকে রয়েছে পাল্টা পাকিস্তানি পরমাণু হামলার ভয়।
ভারতের সংবাদমাধ্যমের সর্বশেষ খবর অনুযায়ী পরিস্থিতি মোকাবেলায় পাকিস্তানকে কূটনৈতিকভাবে কোণঠাসা করার পাশাপাশি সামরিক পদক্ষেপের দরজাও খোলা রাখার কৌশল হাতে নিয়েছেন মোদি।
জানা গেছে, উরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানের ওপর কূটনৈতিক চাপ বাড়ানোর পাশাপাশি দেশের মাটিতে সন্ত্রাসবাদের কড়া মোকাবিলা— এই জোড়া কৌশল নিয়ে হাঁটতে চাইছেন মোদি।
পাশাপাশি কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের কড়া হাতে দমনের পাশাপাশি সেখানে যে কোনো পাকিস্তানি ষড়যন্ত্রেরও উপযুক্ত জবাব দেওয়ার ছাড়পত্র সেনাবাহিনীকে দিয়েছেন তিনি।
দিল্লির গ্রিন সিগন্যাল পেয়ে প্রাথমিকভাবে ভারতের মাটি থেকেই যেন নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর পাকিস্তানি সমর পরিকাঠামো ধ্বংস করে দেওয়া যায়, তাই প্রস্তুতি এখন নিচ্ছে ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং বিএসএফ।
এক বিএসএফ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে ভারতের আনন্দ বাজার পত্রিকা জানিয়েছে, ‘‘আজ উরিতে হামলা চালিয়ে পাকিস্তানি সেনারা ফের সংঘর্ষবিরতি ভেঙেছে। এ বার এমন জবাব দেওয়া হবে যাতে নিয়ন্ত্রণরেখায় পাকিস্তানের পরিকাঠামো কার্যত অচল হয়ে যায়।
নজির হিসেবে বছর দুয়েক আগের পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করেন তিনি। তখন হঠাৎই কাশ্মীরে পাকিস্তানি বাহিনীর গোলাবর্ষণের জবাবে কার্যত বিধ্বস্ত হয়ে যায় পাকিস্তানি সামরিক পরিকাঠামো।
এছাড়া উরির হামলার পরে দুনিয়ার সামনে পাকিস্তানের মুখোশ আরও খুলে দেওয়ার কৌশল নিয়েছে ভারত। কোন পথে তা করা হবে তা নিয়ে বুধবার দিল্লিতে মোদির সঙ্গে বৈঠক করেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং।
মঙ্গলবার ভিয়েনা থেকে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ সভার অধিবেশনে যোগ দিতে যাওয়ার কথা ছিল ভারতের পররাষ্ট্র সচিব এস জয়শঙ্করের। কিন্তু সেখানে না গিয়ে দিল্লি ফিরে ওই বৈঠকে যোগ দেন তিনি। বৈঠকে হাজির ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালও।
সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, ভারতে নিযুক্ত পাকিস্তানি হাইকমিশনার আব্দুল বাসিতকে তলব করা হয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তরে।
এছাড়া উরির সেনাঘাঁটিতে হত জঙ্গিদের রক্ত এবং ডিএনএ-র নমুনাও পর্যালোচনা করছে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (এনআইএ)।
জানা গেছে, জঙ্গিদের ব্যবহৃত এসব জিনিসপত্র পাকিস্তানি। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক লড়াইয়ে প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হবে এগুলো।
তবে এসবের বাইরে দিল্লির বাতাসে চাউর হচ্ছে নাটকীয় কোনো পদক্ষেপের বিষয়। কূটনৈতিক পদক্ষেপের কথা বলে পরিস্থিতিকে থিতিয়ে যাওয়ার সুযোগ দিয়ে, সেই ফাঁকে সত্যিই সত্যিই পাকিস্তানের মাটিতে অবস্থিত জঙ্গি ঘাঁটিতে ‘সার্জিক্যাল অপারেশন’ অপারেশন চালাতে পারে ভারতীয় বাহিনী। ব্যবহার করা হতে পারে জঙ্গিবিমানও। এমনকি সন্ত্রাসীদের ঘাঁটিতে বিশেষ বাহিনী অর্থাৎ কমান্ডো প্রেরণের বিষয়টিও বিবেচনা করছে ভারতীয় নেতৃত্ব।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ভারতের এরকম যুদ্ধংদেহী অবস্থানের বিপরীতে কি হবে পাকিস্তানের পদক্ষেপ।