ঢাকা, শুক্রবার, ৭ ভাদ্র ১৪৩২, ২২ আগস্ট ২০২৫, ২৭ সফর ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তালেবানকে সহায়তার অভিযোগ!

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪:০৮, অক্টোবর ২৭, ২০১১
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তালেবানকে সহায়তার অভিযোগ!

ঢাকা: আফগানিস্তানে তালেবান বিদ্রোহীদেরকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে সহায়তার অভিযোগ উঠেছে। বিবিসি তার এক প্রতিবেদনে এ অভিযোগ উত্থাপন করেছে।



সংবাদ মাধ্যমটিতে বুধবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বিবিসির অনুসন্ধানে অভিযোগ পাওয়া গেছে আফগানিস্তানের তালেবান বিদ্রোহীদের সক্রিয়ভাবে সহায়তা দিচ্ছে পাকিস্তান।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন আফগানিন্তান থেকে তার সৈন্যদের প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত, ঠিক সেই মুহূর্তে পাকিস্তান বলেছে, তাদের ভুখ- থেকে জঙ্গি গ্রুপগুলো যেন কাজ করতে না পারে সে জন্য তারা আরও বেশি সতর্ক।

কিন্তু বিবিসির ওই তদন্তে আভাস পাওয়া যাচ্ছে, প্রকাশ্যে পাকিস্তান ওয়াশিংটনের মিত্র হলেও গোপনে তারা তালেবানকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।

বিবিসির সংবাদদাতা ডেভিড লোয়েন বলছেন, ২০০৬ সালে যখন আফগানিস্তানে ব্রিটিশ ও আমেরিকান সেনাদের হতাহত হওয়ার সংখ্যা হঠাৎ করে অনেক বেড়ে গিয়েছিল, ওই সময়ই তালেবানদের পাকিস্তান সহায়তা বাড়িয়ে দেয়।

একজন তালেবান কমান্ডার এবং একজন আত্মঘাতী হামলাকারী উভয়েই বিবিসিকে বলেছেন, তারা পাকিস্তানী সৈন্য এবং আইএসআইএ’র লোকদের কাছ থেকেই বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ পেয়েছেন।

নাম প্রকাশ না করে একজন তালেবান কমান্ডার বলেন, আমাদেরকে বিশেষায়িত অস্ত্রের প্রশিক্ষণ দিতে সামরিক বাহিনীর লোকেরা গাড়িতে করে সকাল ৮টায় আসতো আবার বিকেল ৪টায় চলে যেতো। তাদের পরনে থাকতো সামরিক উর্দি, আইএসআইএ’র পোশাক।

আরেকজন তালেবান বিদ্রোহী বলেন, আমাদেরকে একটা কালো জানালাওয়ালা কালো গাড়িতে তোলা হলো, যা স্পস্টতই আইএসআইএ’র গাড়ি। পুলিশ বা অন্য কেউ এসব গাড়ি থামানোর সাহস পায় না। আমরা লান্ডিকোটাল দিয়ে একটা পাহাড়ি এলাকায় গেলাম, জালালাবাদের কাছে সকাল আটটায় আমাদের জন্য লোক অপেক্ষা করছিল।

তারা আমাকে বললো, দুপুরে খাবার সময় তুমি বিস্ফোরক ভর্তি পোশাক পেয়ে যাবে।

সীমান্তের কাছাকাছি থাকা মার্কিন সৈন্যরাও বলেছেন, তারা দেখতে পেয়েছেন পাকিস্তানী সৈন্যরা তালেবানকে সাহায্য করছে।

একজন সাবেক সিআইএ’র এজেন্ট ব্রুস রিডেলকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা দায়িত্ব দিয়েছিলেন পাকিস্তানীদের এই গোপন যুদ্ধের ব্যাপকতা সম্পর্কে খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য।

তিনি বলছেন, তার পাওয়া গোয়েন্দা তথ্য থেকে এ ব্যাপারে সংশয়ের কোনও অবকাশ থাকে না। তিনি বলেন, আফগানিস্তানের বিদ্রোহীরা শুধু যে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থার পরোক্ষ সমর্থন পেতো, তাই নয়, এ সমর্থন ছিল সক্রিয়।

রিডেল বলেন, মার্কিন ড্রোন হামলাগুলো তখনই সফল হতে শুরু করলো, যখনই যুক্তরাষ্ট্র ড্রোন হামলা সম্পর্কে পাকিস্তানকে জানানো বন্ধ করে দিলো।

অবশ্য পাকিস্তান সব সময়ই তালেবানদেরকে সরকার বা গোয়েন্দাসংস্থার দিক থেকে সমর্থন দেওয়ার কথা অস্বীকার করে আসছে।

পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জেনারেল আত্তার আব্বাস বলেন, পাকিস্তন বা আইএসআই এসব গোষ্ঠীকে যে সমর্থন দিচ্ছে না, তা প্রকৃত এবং বাস্তব তথ্যগুলোর দিকে তাকালেই দেখা যাবে।

তবে আইএসআইএ’র সাবেক প্রধান হামিদ গুল বলছেন, পাকিস্তানের দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তার জন্য আফগানিস্তানের সাথে সম্পর্ক রাখাটা জরুরি।

বাংলাদেশ সময়: ০৩৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।