ঢাকা: প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় প্রকৃতি থেকে অনেক অনুপ্রেরণা পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। আধুনিক যুগেও এই ধারা থেমে নেই।
যেমন সম্প্রতি গবেষকরা বলেছেন, মানুষের মস্কিষ্ককে ভয়াবহ আঘাত থেকে রক্ষা করার জন্য যে হেলমেট তৈরি হয়েছে তার উন্নয়নের জন্য কাঠঠোকরা পাখি একটি ক্লু হতে পারে।
তারা বলছেন, কাঠঠোকরার শারীরিক গঠন ও আচরণ বিশ্লেষণ করে এমন কিছু কৌশল তারা দেখতে পেয়েছেন যা হেলমেটের উন্নয়নে কাজে লাগবে।
কাঠঠোকরা পাখি অনেক শক্ত কাঠের গুঁড়িতে খুব দ্রুত ঠোঁকরাতে পারে। অথচ তাদের মস্তিষ্কের কোনো ক্ষতি হয় না।
কাঠঠোকরার মাথার খুলির গঠন নিয়ে গবেষণা করেছেন ইয়ুবো ফানের নেতৃত্বে বেইজিংয়ের বেইহাং বিশ্ববিদ্যালয় এবং মিং ঝ্যাংয়ের নেতৃত্বে হংকং পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয়।
তারা উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন দুটি ভিডিও ক্যামেরা দিয়ে কাঠঠোকরার আচরণ ও শারীরিক গঠন পর্যবেক্ষণ করেছেন।
এছাড়া, হাড়ের আয়তন, পুরুত্ব এবং ঘনত্ব পরীক্ষার জন্য তারা কাঠঠোকরার মাথা স্ক্যান করেছেন। এর আলোকে তারা একটি ত্রিমাত্রিক মডেলও দাঁড় করিয়েছেন।
পরীক্ষা-নীরিক্ষার পর তারা যা পেয়েছেন: করোটির (মাথার খুলি) হাড় এবং ঠোঁটের গঠনের কারণেই শক্ত বস্তুতে দ্রুত ঠোকরানোর পরও এই পাখিটির মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয় না।
গবেষকরা বলছেন, করোটিতে বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন মাত্রার ফাঁপানো হাড় এবং ঠোটের উপর ও নিচের হাড়ের দৈর্ঘ্যের পার্থক্য আঘাত প্রতিহত করার পেছনে সবচে বড় ভূমিকার রাখে।
তারা বলেন, আঘাত শোষণ কৌশলই নিরাপত্তার জন্য এককভাবে ভূমিকা রাখে তা নয়। বরং বিভিন্ন ধরনের অঙ্গসংস্থানের মিলিত ভূমিকায়ই কাঠঠোকরার মস্তিষ্কের নিরাপত্তা ব্যুহ তৈরি করে।
ড. ফান বলেন, ‘নতুন নিরাপত্তা বর্ম তৈরিতে কাঠঠোকরার অঙ্গসংস্থানের এই সমন্বিত কৌশল কাজে লাগতে পারে। ’
গবেষকদের এই পর্যবেক্ষণটি অনলাইন বিজ্ঞান সাময়িকী PLoS ONE এ প্রকাশিত হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১১