মস্কো: রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে বাধা সৃষ্টি করতে পশ্চিমা দেশগুলো প্রতারণা ও প্রতিশ্রুতি ভঙ্গসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক অসৎ উপায় অবলম্বন করেছে। এই অভিযোগ করেছেন রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ভ্লাদিমির পুতিন।
কমেরসান্ত নামের একটি দৈনিক পত্রিকায় দেওয়া সাক্ষাৎকারে পুতিন বলেন, মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন ২০০৭ এ তিনি একটি ভাষণ দেন, যা এখনও প্রাসঙ্গিক। অনেক পশ্চিমা দেশ রাশিয়ার সঙ্গে লেনদেনের ক্ষেত্রে অসৎ আচরণ করে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। মিউনিখের ওই ভাষণটিকে পুনরায় স্নায়ুযুদ্ধ শুরু হওয়ার ঘোষণা বলে অনেক রাজনীতিক বিবেচনা করেন।
তিনি বলেন, ‘পূর্ব ইউরোপ থেকে প্রত্যাহারের সময় ন্যাটোর মহাসচিব ইউএসএসআর (সোভিয়েত ইউনিয়ন) এর কাছে অঙ্গীকার করেছিলেন: সোভিয়েত ইউনিয়ন নিশ্চিত থাকতে পারে ন্যাটো তার বর্তমান সীমানা বিস্তৃত করবে না। ’
পুতিন বলেন, ‘আর এটা কি? আমি তাদের (ন্যাটো কর্মকর্তাদের) জিজ্ঞেস করেছিলাম। তাদের কিছুই বলার ছিলো না। তারা আমাদের সঙ্গে নির্মমভাবে প্রতারণা করেছে। ’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার মনে হয়, মিউনিখের ভাষণ এখনো কার্যকর। কারণ আমি সত্য বলেছিলাম। সেসময় তারা (পশ্চিমা দেশগুলো) আমাদের একটি কথা বলেছিলো, আর আমি বলেছিলাম ভিন্ন কথা। এই পৃথিবীর পূর্ণজ্ঞানে তারা আমাদের ঠকিয়েছে। ’
২০১০ সালের মে মাসে লাইবেরিয়া থেকে আটক রাশিয়ার বিমানচালক কনস্তানতিন ইয়ারোশেঙ্কোর ব্যাপারে কথা বলেন। মাদক পাচারের অভিযোগে তাকে আটক করে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়।
তিনি বলেন, ‘তাঁর আইনজীবী ব্যাপারটা পরিষ্কারভাবে তুলে ধরেছেন: আফ্রিকার একটি দেশে রাশিয়ার একজন নাগরিক মাদক পাচারের জন্য অভিযুক্ত হয়েছেন। এখানে যুক্তরাষ্ট্র নাক গলাতে যাবে কেন? কেউই ঠিকভাবে উত্তরে দিতে পারেনি! তারা একজন বিদেশি নাগরিককে গোপনে সরিয়ে ফেলল। এটা কি?’
পুতিন কথা বলতে থাকেন, ‘এক্ষেত্রে মিউনিখে আমি যা বলেছিলাম তা আজও প্রাসঙ্গিক। ’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে আন্তরিক উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি দেখব, তিনি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছেন নাকি নিচ্ছেন না। ’
২০০৯ সালে ওবামা মতায় আসার যুক্তরাষ্ট-রাশিয়ার সম্পর্কের উন্নতি হয়। ওবামা রাশিয়ায় সফর করেন। ২০১০ সালের এপ্রিলে ওবামা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ কৌশলগত অস্ত্র হ্রাস বিষয়ক স্টার্ট-১ চুক্তির পরিবর্তে নতুন একটি চুক্তিতে স্বার করেন। স্টার্ট-১ চুক্তির মেয়াদ গত ৫ ডিসেম্বর শেষ হয়ে গেছে। নতুন চুক্তিটি দুই দেশের সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময়: ১৬২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০১০