ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

সুন্দরবন সুরক্ষার প্রচেষ্টাকে সমর্থন দিয়েছে ইউনেস্কো 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ৪, ২০২৩
সুন্দরবন সুরক্ষার প্রচেষ্টাকে সমর্থন দিয়েছে ইউনেস্কো 

ঢাকা: সুন্দরবনের সম্পদের সুরক্ষা বৃদ্ধি করার জন্য বাংলাদেশের অব্যাহত প্রচেষ্টাকে ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটি সমর্থন দিয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। একই সঙ্গে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পরিষদের ৪৫তম বর্ধিত সভায় সুন্দরবন রক্ষায় এক দশকে বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত উদ্যোগের প্রশংসা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

 

বুধবার (০৪ অক্টোবর) সকালে সচিবালয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

পরিবেশমন্ত্রী বলেন, সুন্দরবনের আউটস্ট্যান্ডিং ইউনিভার্সাল ভ্যালুর ওপর ক্ষতিকর প্রভাব এড়াতে মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্টে আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল থার্মাল টেকনোলজি ব্যবহার, সরকারের পাওয়ার সিস্টেম মাস্টারপ্ল্যান- ২০১০ সংশোধন ইত্যাদি পদক্ষেপের প্রশংসা করা হয়েছে। ন্যাশনালি ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিউশনের অংশ হিসেবে ছয়টি কয়লা-চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাতিল করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানানো হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, সুন্দরবনের ওপর উন্নয়ন কার্যক্রমের প্রভাব নিরসনের লক্ষ্যে ২০২১ সালে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের স্ট্যাটেজিক এনভায়রনমেন্টাল অ্যাসেসমেন্ট করা হয় এবং এর আলোকে স্ট্যাটেজিক এনভায়রনমেন্টাল ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান প্রস্তুত করায় ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটি বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেছে।

তিনি বলেন, কোভিডের কঠিন সময়ে ন্যাশনাল অয়েল অ্যান্ড কেমিক্যাল স্পিল কন্টিনজেন্সি প্ল্যান ২০২০ গ্রহণ এবং জরুরি পরিস্থিতিতে সম্ভাব্য বিরূপ প্রভাব প্রশমণে এটির বাস্তবায়নের জন্য কমিটি সভায় বাংলাদেশের প্রশংসা করা হয়েছে। ভারত ও বাংলাদেশ অংশে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য উন্নয়নে যৌথ ব্যবস্থাপনার কার্যক্রমকে স্বাগত জানানো হয়েছে। এবং এই কার্যক্রম আরো জোরদার করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

সুন্দরবন ও এর জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের লক্ষ্যে ২০৩০ সাল পর্যন্ত সরকার গাছ কাটা, ক্রয়-বিক্রয়, ব্যবহার ও পরিবহন নিষিদ্ধ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সুন্দরবনের মোট আয়তনের ৫৩.৫২ শতাংশ রক্ষিত এলাকা থেকে সকল ধরনের সম্পদ আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সরকার বন্যপ্রাণীর প্রধান প্রজননকাল জুন, জুলাই এবং আগস্ট এই ৩ মাস সুন্দরবন থেকে সকল ধরনের বনজদ্রব্য সংগ্রহ এবং পর্যটকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ২০২১ সাল থেকে রাস মেলা বন্ধ করায় সুন্দরবনে এসময় পূর্বের মতো হরিণ শিকারের কোন ঘটনা ঘটেনি এবং সুন্দরবনের পরিবেশের ওপর কোন বিরূপ প্রভাব পড়েনি।

বাঘ সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ টাইগার একশন প্লান ২০১৮-২০২৭ প্রণয়ন করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বাঘ জরিপ, বাঘের শিকার বিষয়ক প্রাণী জরিপ, বাঘ মানুষ দ্বন্দ্ব নিরসনে লোকালয় সংলগ্ন এলাকায় ৬০ কিলোমিটার দীর্ঘ নাইলনের বেষ্টনি নির্মাণ, জলোচ্ছ্বাসের সময় বন্যপ্রাণীর আশ্রয়ের জন্য মাটির উঁচু টিলা নির্মাণসহ বাঘ সংক্রান্ত অন্যান্য গবেষণা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালে সুন্দরবনকে জাতিসংঘের শিক্ষাবিজ্ঞান ও সংস্কৃতি–বিষয়ক সংস্থা ইউনেসকো বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি প্রদান করে।


বাংলাদেশ সময় : ১৩০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৪,২০২৩
জিসিজি/এমএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।