ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কোন সড়কে কী গতিতে চলবে যান, নির্ধারণ করেছে সরকার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৯ ঘণ্টা, মে ৮, ২০২৪
কোন সড়কে কী গতিতে চলবে যান, নির্ধারণ করেছে সরকার

ঢাকা: দেশে দুর্ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় গতি কমিয়ে আনতে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ।  

নতুন নীতিমালা অনুযায়ী দেশের এক্সপ্রেসওয়ে, মহাসড়কে যানবাহন চলাচলের সর্বোচ্চ গতিসীমা ৮০ কিলোমিটার।

নগর-মহানগরে সর্বোচ্চ গতিসীমা ৪০ কিলোমিটার।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সুপারিশে এ নীতিমালা প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ।

বুধবার (৮ মে) থেকেই এই নীতিমালা কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছেন বিআরটিএর রোড সেফটি বিভাগের পরিচালক শেখ মোহাম্মদ মাহবুব-ই-রব্বানী।  

তিনি জানান, নতুন নীতিমালা অনুযায়ী এক্সপ্রেসওয়েতে প্রাইভেটকার, বাস ও মিনিবাসের গতিসীমা হবে ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার, মোটরসাইকেল ৬০ কিলোমিটার এবং ট্রাক চলবে ৫০ কিলোমিটার গতিতে। সিটি করপোরেশন, পৌরসভা এবং জেলা শহরের মধ্যে মোটরসাইকেল ও ট্রাক ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৩০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারবে। অন্যান্য যানবাহনের জন্য এ গতিসীমা ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার।

যদি কেউ গতিসীমা লঙ্ঘন করে তার বিরুদ্ধে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইন অমান্যকারীকে তিন মাসের কারাদণ্ড বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হতে পারে।

বিআরটির চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার অর্ধেকে নামিয়ে আনতে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর আওতায় বিআরটিএ এ বিধিমালা তৈরি করেছে, যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি)।

সড়ক পরিবহন বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের সড়ক দুর্ঘটনার শতকরা ৭০-৮০ শতাংশ ঘটে দ্রুত ও বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর কারণে। সড়ক পরিবহন আইনে গতিসীমা নিয়ন্ত্রণের বিধিবিধান থাকলেও মহাসড়ক ও সড়কে যানবাহনের গতিসীমার কোনো দিকনির্দেশনা ছিল না। এতে সড়ক আইন বাস্তবায়নে সংকট তৈরি হয়েছিল। পাশাপাশি রাস্তা নির্মাণকারী বিভিন্ন সরকারি সংস্থা একই ধরনের রাস্তায় ভিন্ন ভিন্ন গতিসীমা নির্ধারণ করে আসছিল, এতে চালকরা বিভ্রান্ত হন বলে অভিযোগ ছিল।

গতিসীমা নির্ধারণের নীতিমালায় বলা হয়েছে, এক্সপ্রেসওয়ে ও জাতীয় সড়কে তিন চাকার যান চলাচলের অনুমতি দেওয়া হবে না।  

নতুন নীতি অনুযায়ী, জাতীয় মহাসড়কে (ক্যাটাগরি এ) প্রাইভেটকার, এসইউভি, মাইক্রোবাস, বাস, মিনিবাসসহ অন্যান্য হালকা যানবাহন সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার গতিতে চলাচল করতে পারবে এবং ট্রাক, বাইক এবং আর্টিকুলেটেড লরির জন্য সীমা হবে ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার। জাতীয় সড়কে (ক্যাটাগরি বি) গাড়ি, বাস ও মিনিবাসের গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ৭০ কিলোমিটার, বাইকের জন্য ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার এবং ট্রাক ও আর্টিকুলেটেড লরির জন্য ৪৫ কিলোমিটার। জেলা সড়কে গাড়ি, বাস ও মিনিবাসের ক্ষেত্রে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার, বাইক ৫০ কিলোমিটার এবং ট্রাক ও আর্টিকুলেটেড লরির ক্ষেত্রে ঘণ্টায় ৪৫ কিলোমিটার গতি নির্ধারণ করা হয়েছে।

সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও জেলা শহরের ভেতরের রাস্তায় গাড়ি, বাস ও মিনিবাসের গতিসীমা হবে ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার এবং ট্রাক, মোটরসাইকেল ও আর্টিকুলেটেড লরিতে গতিসীমা থাকবে ৩০ কিলোমিটার।

গাইডলাইনে উপজেলা ও গ্রামের রাস্তার গতিসীমাও নির্ধারণ করা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, বাজার ও আবাসিক এলাকার কাছাকাছি গতিসীমা নির্ধারণ করে দেবে। তবে জাতীয় সড়কে ৪০ কিলোমিটার এবং আঞ্চলিক মহাসড়কে ৩০ কিলোমিটারের বেশি হবে না।

নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, এ নিয়ম অ্যাম্বুলেন্স এবং ফায়ার সার্ভিসের মতো জরুরি পরিষেবা দেওয়া যানবাহনের জন্য প্রযোজ্য হবে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৯ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০২৪ 
এনবি/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।