ঢাকা, বুধবার, ১১ চৈত্র ১৪৩১, ২৬ মার্চ ২০২৫, ২৫ রমজান ১৪৪৬

জাতীয়

ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি চক্রের মূলহোতাসহ আটক ৮

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২৫
ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি চক্রের মূলহোতাসহ আটক ৮

ঢাকা: ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি চক্রের মূলহোতাসহ আটজনকে আটক করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। রাজধানীর বিমানবন্দর ও কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে তাদের আটক করা হয়।

আটককৃতরা হলেন, উত্তম চন্দ্র দাস (৩৪), হাবীব আহমেদ (২৬), ফারুক (৫৫), জুবায়ের (২৯), সোহেল রানা (২১), আব্দুল্লাহ আল মুমিন (৩০), প্রকাশ চন্দ্র রায় (৩৪) ও কামরুজ্জামান (৩৫)। তাদের কাছ থেকে ১২টি মোবাইলফোন এবং নগদ তিন লাখ তিন হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান র‌্যাব-১ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক সালমান নূর আলম (মিডিয়া অফিসার)।

তিনি জানান, বিগত বছরগুলোতে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে অধিক সংখ্যক মানুষ ঘরে ফিরছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কতিপয় অসাধু ব্যক্তি ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির সাথে জড়িয়ে পড়ছে বলে জানা যায়। এবারও ঈদ উপলক্ষে ট্রেনের টিকিট ছাড়ার সাথে সাথে তা শেষ হয়ে যাচ্ছে বলে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভিযোগ পাওয়া যায়। ফলে র‌্যাব-১ এর একটি অভিযানিক দল অপরাধীদের আটকের লক্ষ্যে বিভিন্ন রেলওয়ে স্টেশনে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়ে এবং বিভিন্ন রেলস্টেশন থেকে টিকিট কালোবাজারি চক্রের শিকড়ের অনুসন্ধানে তৎপর হয়।  এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-১ এর একটি অভিযানিক দল এই চক্রের সাথে জড়িত অপরাধীদের চিহ্নিতকরণ ও তথ্য উদঘাটনের লক্ষ্যে বিমানবন্দর স্টেশন এলাকায় প্রাথমিকভাবে কৌশলগত ফাঁদপাতে। ওই ফাঁদে প্রথমে পা দেয় উত্তম চন্দ্র দাস। তাকে ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশন এলাকা থেকে একটি অনলাইন টিকিটের প্রিন্টেড কপিসহ আটক করা হয়। পরবর্তীতে তার দেওয়া তথ্যমতে ঢাকার কাওলা থেকে তারই ঘনিষ্ঠ সহযোগী হাবীব আহমেদ, ফারুক ও বাংলাদেশ রেলওয়ের আউটসোর্সিং কর্মচারী মো. জুবায়েরকে তিনটি অনলাইন টিকিটের প্রিন্টেড কপিসহ আটক করা হয়।

সালমান নূর আলম জানান, উত্তম চন্দ্র দাসের কাছ থেকে জানা যায়, তিনি প্রতি বছর ঈদ মৌসুমে আনুমানিক প্রায় ৫০০-৭০০ রেলওয়ে টিকিট অবৈধ উপায়ে কালোবাজারি করতো। এভাবে প্রতি মৌসুমে তিনি প্রায় ৩-৪ লাখ টাকার মতো অবৈধভাবে আয় করতেন। তার নামে ইতোমধ্যে পুলিশের পিসিপিআর অনুযায়ী চারটি মামলা রয়েছে।

তিনি জানান, পরবর্তীতে আটকদের জিজ্ঞাসাবাদের পরিপ্রেক্ষিতে র‌্যাব-১ এর গোয়েন্দা দল পুনরায় ফাঁদ পাতে। এবার ওই ফাঁদে পা দেয় বাংলাদেশ রেলওয়ের আউটসোর্সিং কর্মচারী মো. সোহেল রানা। তাকে ছয়টি অনলাইন টিকিটের প্রিন্টেড কপিসহ বিমানবন্দর রেলস্টেশন এলাকা থেকে আটক করা হয়। তারপর আটকদের সাথে নিয়ে র‌্যাব-১ এর অভিযানিক দল কমলাপুর রেলস্টেশনে যায়।

আটকদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে বাংলাদেশ রেলওয়ের আউটসোর্সিং কর্মচারী আব্দুল্লাহ আল মুমিন এবং প্রকাশ চন্দ্র রায়কে আটক করা হয়। আটকদের মোবাইল যাচাই-বাছাই করে দেখা যায় তারা প্রত্যেকে টিকিট কালোবাজারির সাথে প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত।

তিনি আরও জানান, অনলাইন প্ল্যাটফর্মের কিছু অসাধু কর্মী টিকিট কালোবাজারির সাথে জড়িত বলে স্বীকার করেন আটক প্রকাশ। পরে ওই চক্রের অন্যতম গ্রাহক কামরুজ্জামানকে আটক করা হয়। তিনি সাধারণত প্রতি মাসে ১০০-১৫০ এর বেশি টিকিট ওই কালোবাজারির চক্র থেকে ক্রয় করতেন বলে জানা যায়।

আটকদের বিরুদ্ধে আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন বলে জানান সালমান নূর আলম।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২৫
এসসি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।