ঢাকা, সোমবার, ১৭ চৈত্র ১৪৩১, ৩১ মার্চ ২০২৫, ০০ শাওয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ঢাকা-ভোলা রুটে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে কার্নিভাল ক্রুজ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩২ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০২৫
ঢাকা-ভোলা রুটে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে কার্নিভাল ক্রুজ এমভি কার্নিভাল ক্রুজ।

ঢাকা: দ্বীপজেলা ভোলার পর্যটন ও পণ্য পরিবহনে নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে ডে-নাইট ফেরিযুক্ত লঞ্চ সার্ভিস এমভি কার্নিভাল ক্রুজ। যেখানে একজন যাত্রী তার গাড়িটিও সঙ্গে করে নিয়ে যেতে পারছেন ভোলায়।

মূলত এটি এক ধরনের রো রো ফেরি ও যাত্রী পরিবহন লঞ্চ। কার্নিভাল ক্রুজে একসঙ্গে ২৫টি প্রাইভেটকার পরিবহন করা যায়। বড় গাড়ি বা ট্রাক হলে ১২ থেকে ১৫টি পরিবহন করা সম্ভব। এ ছাড়া দোতলা ও তৃতীয় তলায় যাত্রীদের জন্য রয়েছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ৫৭টি কেবিন ও ১৮০ চেয়ার সিট।

পদ্মা সেতু চালুর পর ঢাকার সঙ্গে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীবাহী লঞ্চে চলছে খরা। বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালীসহ বড় রুটে হাতে গোনা কিছু লঞ্চ চলাচল করলেও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত যাত্রী। তবে ব্যতিক্রম চিত্র ঘটছে ঢাকা থেকে ভোলা রুটে চালু হওয়া পণ্যবাহী ট্রাক বহনের সুবিধাসহ চলাচল করা জাহাজ কার্নিভাল ক্রুজের ক্ষেত্রে। ভোলা থেকে প্রতিদিন নানা ধরনের পণ্য নিয়ে জাহাজ ভর্তি ট্রাক আসছে ঢাকায়। একই দৃশ্য ঢাকা থেকে ভোলা যাওয়ার ক্ষেত্রেও।

পণ্য পরিবহন চালকরা বলছেন, তিনটি সুবিধার কারণে তারা সড়কপথ পরিহার করে গাড়ি নিয়ে জাহাজে ভোলা যাওয়া-আসা করছেন। এর মধ্যে রয়েছে জাহাজে পণ্য নিয়ে যাওয়া-আসা করায় তাদের সড়কের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে না। বিশেষ করে ভোলা থেকে বরিশাল যাওয়া-আসার পথে লাহারহাট ফেরি কিংবা নোয়াখালী হয়ে ভোলা যেতে যে মজু চৌধুরীর হাট ফেরি রয়েছে, সেখানে ফেরি পার হতে ও দুপাশের দীর্ঘ লাইনে একেকটি গাড়ি পার হতে চার-পাঁচ ঘণ্টা সময় লেগে যায়। এ ছাড়া লাহারহাট ফেরি রাতে বেশিরভাগ সময়ই বন্ধ থাকে। একইভাবে মজু চৌধুরীর হাট ফেরি চলাচল নির্ভর করে অনেকটা জোয়ার-ভাটার ওপর। তাই ট্রাকচালকরা বলছেন, কার্নিভাল ক্রুজ চালু হওয়ায় ঢাকা থেকে ভোলা যেতে তাদের এখন সময় কম লাগছে। আগে যেখানে সড়কপথে ভোলা যেতে সময় লাগতো ১০-১১ ঘণ্টা, সেখানে এখন লাগে পাঁচ ঘণ্টা। এ ছাড়া নদীপথের এই জাহাজে ট্রাক নিয়ে যেতে তাদের খরচও কম লাগছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআইডব্লিউটির চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা জানান, বেসরকারি উদ্যোগে চালু হওয়া এ কার্নিভাল ক্রুজ দ্বীপজেলা ভোলার সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যে সহায়ক ভূমিকা রাখছে। পাশাপাশি ভোলার পর্যটন বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে এ শিপ।  

ভোলার স্থানীয়রা বলছেন, এই কার্নিভাল ক্রুজ মাত্র ৪ থেকে ৬ ঘণ্টায় ঢাকা থেকে ভোলা বা ভোলা থেকে ঢাকায় পণ্য ও যাত্রী পরিবহন করতে পারে। এর ফলে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পণ্য দ্রুত সময়ে ভোলার ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তারা রাজধানীতে পৌঁছাতে পারছেন। ফেরি সার্ভিস এই অঞ্চলের অর্থনীতি প্রবৃদ্ধি অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

ভোলা জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহান বলেন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত দ্বীপজেলা ভোলা ভ্রমণে কার্নিভাল ক্রুজ ভোলার পর্যটন বিকাশে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। পাশাপাশি ভোলার ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের পণ্য সল্প সময়ে রাজধানীতে পৌঁছাতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে এ জাহাজ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩১ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০২৫
এমআইএইচ/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।