বাঘ পাচার ও বন্যপ্রাণী অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, বাঘের জীবনের বিরুদ্ধে যারা অপরাধ করে, তাদের চিহ্নিত করে তালিকা করে ব্যবস্থা নিতে হবে।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বন ভবনে ‘বিশ্ব বাঘ দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রিজওয়ানা হাসান এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিশ্ব বাঘ দিবস মানে শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিকতা নয়, বাঘ রক্ষায় বাস্তব উদ্যোগ নিতে হবে। বাংলাদেশে সুন্দরবন, নদী ও বাঘ নিয়ে আমরা গর্ব করি। কিন্তু বাঘের সংখ্যা বিশ্বজুড়েই আশঙ্কাজনকভাবে কমছে।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপে দেশে বাঘের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। তবে এই অগ্রগতি ধরে রাখতে হলে আরও কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।
সুন্দরবনের হরিণ ও বাঘের অস্তিত্ব একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। সেখানে আগুন লাগা বা পরিবেশগত হুমকি বাঘের জন্যও হুমকি তৈরি করে- বলেন তিনি।
বাঘ হত্যার কারণগুলোর মধ্যে পাচার ও গ্রামবাসীর সঙ্গে দ্বন্দ্ব অন্যতম বলে উল্লেখ করেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, বাঘ হত্যার পেছনে পাচারকারীদেরও বড় ভূমিকা রয়েছে। আমরা পাচারের রুট জানি না বলে দায় এড়াতে পারি না। এটি নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের ব্যর্থতা।
উপদেষ্টা বলেন, আমার কাছে তথ্য আছে, বাঘ সংক্রান্ত নয়টি মামলা এখনও পেন্ডিং। মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য উদ্যোগ নিতে হবে। পাচারকারীদের ছাড় দেওয়া যাবে না। আমাদের সর্বশক্তি দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে নামতে হবে।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, বাঘ আমাদের আবেগ, আমাদের ঐতিহ্য। বিশ্বে বাঘ থাকবে কি না, সেটা অনেকটাই বাংলাদেশের ভূমিকার ওপর নির্ভর করছে। এই বৈশ্বিক দায়িত্বের জায়গা থেকে আমাদের আরও সচেতন ও সংকল্পবদ্ধ হতে হবে।
আলোচনা সভায় প্রধান বন সংরক্ষক আমীর হোসাইন চৌধুরীর সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন বন সংরক্ষক মো. সানাউল্লাহ পাটোয়ারী।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ। আলোচক হিসেবে ছিলেন বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ড. মো. আলী রেজা খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ারুল ইসলাম ও আইইউসিএন বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ বিপাশা এস হোসেন।
আরকেআর/আরবি