ঢাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত শরীয়তপুরের আব্দুল্লাহ ছামীম (১৩) ও আয়মান (১০) এর কবরে শ্রদ্ধা জানিয়েছে বিমানবাহিনীর একটি প্রতিনিধি দল।
এসময় নিহত দুই শিশুর পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বিমানবাহিনী প্রধানের পক্ষে উইং কমান্ডার আল-আমিন।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিকেল ৩টার দিকে ভেদরগঞ্জ উপজেলার ডিএম খালী ইউনিয়নের মাঝিকান্দি গ্রামে ছামীমের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন। পরে নারায়ণপুর ইউনিয়নে আয়মানের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন তারা। এসময় তারা নিহতদের পরিবারটির প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
এর আগে নিহতদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান তারা। এসময় নিহত ছামীমের ভাই জাহিদুল ইসলাম, চাচা লাল মিয়া মাঝি, ফুপু হামিদা বেগম ও মামা সাইফুল ইসলাম, নিহত আয়মানের চাচী মীম সহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় বিমানবাহিনীর উইং কমান্ডার আল-আমিন বলেন, মাইলস্টোনে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক দুর্ঘটনা সত্যি হৃদয় বিদারক। আমরা এর জন্য গভীর শোক প্রকাশ করছি। এ ঘটনায় শহীদ হওয়া শিক্ষার্থীসহ অন্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। যারা আহত হয়ে চিকিৎসাধীন তাদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি। আমরা বিমানবাহিনী প্রধানের নির্দেশে নিহত ছামীম ও আয়মানের প্রতি সমবেদনা জানাতে এসেছি।
তিনি (বিমানবাহিনী প্রধান) বলেছেন, মাইনস্টোনে নিহত সব শিশুকে বিমানবাহিনীর সদস্য করে নেওয়া হয়েছে। বিমানবাহিনীর সদস্যরা যেসব সুযোগ-সুবিধা ও সহায়তা পায়, তারা সেসব পাবেন। এজন্য একটি সরকারি তদন্ত কমিটি হয়েছে, সেই কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সেভাবে ভবিষ্যতে সাহায্য-সুবিধা আসবে।
প্রসঙ্গত, প্রতিদিনের মতো সহপাঠীদের সঙ্গে ২১ জুলাই বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে ক্লাস করছিলেন শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলা ডিএমখালী ইউনিয়নের মৃত আবুল কালাম মাঝির ছেলে ছামীম। টিফিনের আর মাত্র ১০ মিনিট বাকি, এরই মধ্যে বিকট শব্দে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিধ্বস্ত হয় বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান। সেই ঘটনায় অন্যান্যদের সঙ্গে গুরুতর আহত হয় ছামীম। পরবর্তীতে তাকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা উদ্ধার করে স্বজনদের খবর দিলে অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ার তাকে ভর্তি করা হয় বার্ন ইউনিটে।
পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে ১১টার দিকে মৃত্যুবরণ করে ছামীম। এ দুর্ঘটনায় ক্লাসে থাকা একই উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের বাপ্পি হাওলাদারের মেয়ে আয়মানসহ বেশ অনেকে গুরুতর আহত হয়। তৎক্ষণাৎ আয়মানকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। বিস্ফোরণ ও আগুনে তার শরীরের প্রায় ৪৫ শতাংশ দগ্ধ হয়। টানা চারদিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর ২৫ জুলাই সকাল ৯টা ৩২ মিনিটে মারা যায় আয়মান।
আরএ