ঢাকা, শুক্রবার, ২৫ আশ্বিন ১৪৩২, ১০ অক্টোবর ২০২৫, ১৭ রবিউস সানি ১৪৪৭

সারাদেশ

ভিখারির ঘরে বস্তায় মিলল সোয়া লাখ টাকা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২:০০, অক্টোবর ১০, ২০২৫
ভিখারির ঘরে বস্তায় মিলল সোয়া লাখ টাকা টাকাগুলো গোনা হয়

সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জে সালেহা পাগলী নামে এক ভিখারির ঘরে দুই বস্তায় মোট সোয়া এক লাখ টাকা পাওয়া গেছে। স্থানীয় ছয়/সাতজন পাঁচ ঘণ্টা ধরে গুনে ওই টাকা সালেহার একমাত্র ওয়ারিশ মেয়ের জন্য দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পৌর এলাকার মাছুমপুর মহল্লায় এ টাকা গণনা করেন স্থানীয়রা। দুপুর থেকেই টাকা গোনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়।  

এতে এক, দুই, পাঁচ, দশ, বিশ, পঞ্চাশ ও একশ, দুইশ এবং পাঁচশ টাকার নোট ছিল। সব মিলিয়ে এব লাখ ২৬ হাজার ২৫৩ টাকা পাওয়া গেছে। এছাড়া অনেক টাকা নষ্ট হয়ে গেছে।

সালেহা মাছুমপুর মহল্লার মৃত আব্দুস ছালামের স্ত্রী। তিনি সালেহা পাগলী নামেই এলাকায় পরিচিত। তিনি রায়পুর ১ নম্বর মিলগেটে শ্রমিকদের পরিত্যক্ত কোয়ার্টারের বারান্দায় একাই থাকতেন।

স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. হাসু জানান, আমি সকালে ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি অনেক লোকজন। তবে সেখানে সালেহা ছিলেন না। সেখানে একটি ছোট ও একটি বড় বস্তা পাই। বস্তা খুলে দেখি, ভেতরে কাপড় দিয়ে মোড়ানো খুচরা পয়সা। তখন সবাই বলেন, সালেহা বেগম নামে ওই নারীর টাকা এগুলো। পরে স্থানীয় মুরব্বিদের ডেকে তাদের সামনে টাকার বস্তা দুটো উদ্ধার করি।

ওই ভিখারি মাছুমপুর মহল্লার একটি ঘরে থাকেন। আমরা তার কাছে বস্তা দুটো নিয়ে গেলে তিনি বলেন, সেগুলো তার। পরে এলাকার লোকজনকে দায়িত্ব দিই- টাকাগুলো গুনে রাখতে। পরে সদর থানার পুলিশ এলে তাদের সামনে টাকাটা সালেহার মেয়ের জন্য গ্রামের একজন মাতব্বরের হেফাজতে দেওয়া হয়।

ওয়ার্ড যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল শেখ বলেন, টাকা এমনভাবে পুটলি করে রাখা হয়েছিল যে ময়লা পচে দুর্গন্ধ হয়ে গেছে।

সিদ্দিক হোসেন নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, সালেহার মা-বাবা দুজনেই ভিক্ষা করেছেন। তিনিও ছোটবেলা থেকেই ভিক্ষা করেন। ২০ বছর ধরে ভিক্ষা করছেন। তার বস্তায় বোতল, হাঁড়ি-বাতিল, পলিথিন, টোপলা, বাদামের খোসা ইত্যাদি ছিল।

সালেহা বেগমের মেয়ে স্বপ্না খাতুন বলেন, আমার মা পাগলাটে টাইপের। জায়গায় জায়গায় ঘুরে টাকা-পয়সা পেয়েছে, সেগুলো পোটলা করে রেখেছে। আমাদের কাউকে বলেনি। আমাদের কোনো কথা ভালোভাবে শোনেনি। নিজে যেটা বুঝেছে সেটাই করেছে। সারাদিন এদিক-ওদিক ঘুরে রাতে মিলগেটের বারান্দায় ঘুমিয়েছে।

সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) পতিন কুমার বনিক বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখি টাকা গোনা হচ্ছে। আমি বেশ কিছুক্ষণ সেখানে থেকে টাকা গোনা দেখেছি। দেখা গেল, নোট টাকা ৯৫ হাজার, আর বাকিগুলো কয়েন। মোট এক লাখ ২৬ হাজার ২৫৩ টাকা। বিষয়টা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে তার একমাত্র ওয়ারিশ মেয়ের জিম্মায় টাকাগুলো দেওয়া হয়।

এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।