ঢাকা: বৃহস্পতিবার ফেডারেশন কাপের ফাইলানে মুখোমুখি হয় শেখ জামাল ও মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া চক্র। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ম্যাচের প্রথমার্ধ শেষে ফেডারেশন কাপের গতবারের রানার্সআপ মুক্তিযোদ্ধা ৪-২ গোলে এগিয়ে বিরতিয়ে যায়।
ফলে ম্যাচটি গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। আর অতিরিক্ত সময়ে এমেকা ডার্লিংটন ও রুবেল মিয়ার (৬-৪) গোলে জামাল পৌঁছে যায় জয়ের বন্দরে। ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেন জামালের হাইতিয়ান ফরোয়ার্ড ওয়েডসন অ্যানসেলমে।
টানা পাঁচবার ফেডারেশন কাপের ফাইনালে খেলা শেখ জামালের এটি তৃতীয় শিরোপা। গতবারের ফেডারেশন কাপের চ্যাম্পিয়নও শেখ জামাল ধানমিন্ড ক্লাব।
প্রথমার্ধের ৬ মিনিটে শেখ জামালের মামুনুলের ইসালামের লম্বা পাস দেয় সোহেল রানাকে। আর সোহেল রানার উড়ন্ত ক্রসকে হেড দিয়ে গোলে রূপান্তর করেন এমেকা ডর্লিংটন। ফলে ১-০ গোলে এগিয়ে যায় ধানমন্ডি পাড়ার দলটি।
তবে গোল শোধ করতে বেশী সময় নেয়নি আবু ইউসুফের শিষ্যরা। ৮ মিনিটে মুক্তির ফয়সালের ক্রস ডি বক্সের মধ্যে জামালের রক্ষণভাগের খেলোয়াড় ইয়ামিন মুন্না ক্লিয়ার করতে গিয়ে উল্টো জামালের জালে জড়িয়ে দেন। ফলে সমতায় ফেরে অল রেডস খ্যাত মুক্তিযোদ্ধা (১-১)।
১০ মিনিটে জামালের দুঃসময়ের ত্রাণকর্তা অধিনায়ক নাসির উদ্দিন চৌধুরীর শক্তিশালী শটটি ক্রসবারের উপর দিয়ে চলে যায়। এর ঠিক পরেই একটি সুবর্ণ সুযোগ মিস করে মুক্তিযোদ্ধা। ডি বক্সের মধ্যে শেখ জামালের গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ হয় মুক্তির আকরামুজ্জামান লিটন।
১৩ মিনিটে রায়হানের লম্বা থ্রো থেকে বল পান ডি বক্সের মধ্যে থাকা ডার্লিংটন। তার বাড়ানো বল পেয়ে গোল করেন ওয়েডসন অ্যানসেলমে। ফলে ২-১ গোলে এগিয়ে যায় ফেডারেশন কাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন শেখ জামাল।
৩০ মিনিটে ডান প্রান্ত থেকে মুক্তির এনামুলের লম্বা থ্রো বক্সের মধ্যে ঘানার আব্বাস ইনুসার হেড থেকে যায় কামারার পায়ে। কামারা প্লেসিং শটে জামালের জাল কাঁপিয়ে দেয় (২-২)।
৩৯ মিনিটে কর্নার পায় মুক্তিযোদ্ধা। আকরামুজ্জামান লিটনের কর্নার থেকে উড়ন্ত বলে মাথা ছুঁইয়ে গোল করেন মুক্তির অধিনায়ক ও ফরোয়ার্ড এনামুল হক (৩-২)।
৪১ মিনিটে আবারো গোল করেন এনামুল হক। ফয়সালের ক্রস থেকে কামারা সার্বার সহায়তায় বাম পায়ের মাটি কামরানো শটে গোল করেন এনামুল (৪-২)।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে আবারো জমে ওঠে দুই দলের লড়াই। ৫৭ মিনিটে ল্যাংডিং ডার্বোয়ের ফ্রি কিক কোনো মতে ফিরিয়ে দেয় মুক্তির গোলবারের অতন্দ্র প্রহরী তিতুমীর চৌধুরী টিটু।
কিন্তু ৬৩ মিনিটে ঘুরে দাঁড়ায় মারুফুল হকের শিষ্যরা। বল নিয়ে মুক্তির বক্সে ঢুকে পড়েন ওয়েডসন। গোলরক্ষক টিটু এগিয়ে বল ধরতে গিয়ে পড়ে গেলে বল নিয়ে এগিয়ে গিয়ে খুব সহজেই মুক্তির জালে পাঠান এই হাইতিয়ান (৪-৩)।
৭০ মিনিটে নিজের হ্যাট্রিক পূর্ণ করে জামালকে সমতায় ফেরান ওয়েডসন (৪-৪)। নির্ধারিত সময়ে আর কোন গোল না হওয়ার ফলে অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় ম্যাচটি।
অতিরিক্ত সময়ে ল্যান্ডিং ডার্বোয়ের কাট ব্যাক থেকে গোল করেন শেখ জামালের নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড এমেকা ডার্লিংটন। ফলে ম্যাচে ৫-৪ গোলে লিড নেয় ধানমন্ডি পাড়ার দলটি।
আর অতিরিক্ত সময়ের শেষে মুক্তির কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন জামালের রুবেল মিয়া। ওয়েডসনের পাস থেকে গোল করেন শেখ জামালের এই বদলী খেলোয়াড়।
ম্যাচ শেষে বিজয়ী ও বিজিত দলকে পুরস্কৃত করেন ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বাফুফের সিনিয়র সহ-সভাপতি সালাম মুর্শেদী, সহ-সভাপতি বাদল রায় ও সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ।
ফেডারেশন কাপ ২০১৫ চ্যাম্পিয়ন শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব পেয়েছে ৫ লাখ টাকা ও চ্যাম্পিয়ন ট্রফি। আর রানার্সআপ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র পেয়েছে ৩ লাখ টাকা ও রানার্সআপ ট্রফি।
টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা ও সবচেয়ে দামী খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতে নেন শেখ জামালের ওয়েডসন অ্যানসেলমে। টুর্নামেন্টে তার দু’টি হ্যাটট্রিক রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫১, মার্চ ০৫, ২০১৫