ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

টাইগারদের জন্য পাকিস্তানে ‘প্রথম’ জয় পাওয়ার দারুণ সুযোগ

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২০
টাইগারদের জন্য পাকিস্তানে ‘প্রথম’ জয় পাওয়ার দারুণ সুযোগ মাহমুদউল্লাহ ও তামিম ইকবাল/ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের মাটিতে এখন পর্যন্ত কোনো ম্যাচ জেতার স্বাদ পায়নি বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। পাওয়ার সুযোগও অবশ্য ছিল না। কারণ, সর্বশেষ সফরও সেই ১২ বছর আগের কথা। সেই সফর থেকে খালি হাতে ফিরেছিল উঠতি টাইগাররা। এরপর আর যাওয়া হয়নি। আর এবার ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে বেশ চাপে আছে পাকিস্তান। কারণ শেষ ৬ ম্যাচের সবগুলোই হেরেছে তারা। ফলে এটা বাংলাদেশের জন্য সুবর্ণ সুযোগই বটে।

তবে পুরুষ দল না পারলেও নারী ক্রিকেট দল গত নভেম্বরে পাকিস্তানের মাটিতে এক ম্যাচে জয় পেয়েছিল। শুধু ম্যাচ জেতাই নয়, দুই ম্যাচের সিরিজ ড্র করেও এসেছিলেন জাহানারা-ফারজানারা।

কিন্তু ছেলেদের জন্য অবশ্য পাকিস্তানে জয় পাওয়া এখনও অধরা। এবার সেই সুযোগ এসেছে, কিন্তু মাহমুদউল্লাহরা কাজে লাগাতে পারলেই কেবল সেটা সম্ভব।

সর্বশেষ পাকিস্তান সফরে বাংলাদেশ পুরুষ ক্রিকেট দল ৫ ওয়ানডে ও এক টি-টোয়েন্টির সবগুলোতেই হেরে গিয়েছিল। ওয়ানডে সিরিজে ব্যাট হাতে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে সাকিব আল হাসান ছিলেন শীর্ষে। তবে তার ১৯২ রানের বিপরীতে সিরিজের শীর্ষ রান সংগ্রাহক সালমান বাট (৪৫১) অনেকটাই এগিয়ে ছিলেন।  

বল হাতে মাশরাফি বিন মর্তুজা ছিলেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি। তবে এই ডানহাতি পেসারের বিপরীতে অনেকটা এগিয়ে ছিলেন পাকিস্তানের অলরাউন্ডার শহীদ আফ্রিদি (১২ উইকেট)।  

এর আগে ২০০৩ সালের সফরেও পাঁচ ওয়ানডে ম্যাচের সবগুলোতেই হেরে গিয়েছিল বাংলাদেশ দল। আর ৩ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ থেকেও খালি হাতে ফিরেছিল হাবিবুল বাশারের দল। তারও আগে ২০০১-০২ মৌসুমে এশিয়ান  টেস্ট চ্যাম্পিয়নশপেও হারতে হয়েছে। ফলে এখন পর্যন্ত পাকিস্তানের মাটিতে বাংলাদেশের জয় পাওয়া হয়নি।  

২০০৯ সালে লাহোরে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের ওপর সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আয়োজন থেকে নিষিদ্ধ করা হয় পাকিস্তানকে। গত বছর সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। এরপর শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ে পাকিস্তান সফর করে এসেছে। আর বাংলাদেশ ‘তৃতীয়’ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দল, যারা পাকিস্তান সফরে রাজি হয়েছে।

এক যুগ পরে ফের পাকিস্তান সফরে গেছে বাংলাদেশ দল। তবে এবার সফর ভাগ করা হয়েছে তিন ধাপে। প্রথম ধাপের সফরে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে এরইমধ্যে লাহোরে পৌঁছে গেছে টাইগাররা। সিরিজের প্রথম ম্যাচটি মাঠে গড়াবে শুক্রবার (২৩)।

২০০৮ সালে পাকিস্তান সফরে যাওয়া বাংলাদেশ দলের প্রায় সবাই এবারের দলে নেই। নিষেধাজ্ঞার কারণে নেই সাকিব। নিরাপত্তার কারণে যাননি মুশফিকুর রহিম। মাশরাফি অবসর নিয়েছেন। তবে আছেন তামিম ইকবাল ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ফলে এই দুজনের কাঁধে বাড়তি চাপ পড়বে।

ব্যাটিংয়ে মাহমুদউল্লাহ এবং তামিম ছাড়া বাংলাদেশ দলে অভিজ্ঞতায় এগিয়ে আছেন সৌম্য সরকার, লিটন দাসরাও। সংক্ষিপ্ত পরিসরের ক্রিকেটে তাদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে পারবে বাংলাদেশ। তবে তরুণ ব্যাটসম্যান আর ওপেনার বেশি থাকায় দলের ব্যাটিং অর্ডার সাজানোই কঠিন হয়ে যাবে। আশা দেখাচ্ছেন মোহাম্মদ নাঈম ও আফিফ হোসেনরা। দুজনেই সর্বশেষ ভারত সফরে দারুণ ব্যাটিং করেছেন।

বোলিংয়ে বাংলাদেশ দল তুলনামূলক পিছিয়ে থাকবে। কারণ, দলের মূল বোলার সাকিব আল হাসান নেই। অর্থাৎ, সত্যিকারের ম্যাচ উইনার স্পিনার ছাড়াই খেলতে হবে। তবে আমিনুল ইসলাম, মেহেদী হাসান্দের জন্য এটা বড় সুযোগ। আর মোস্তাফিজুর রহমান, শফিউল ইসলাম ও আল-আমিন হোসেনদের অভিজ্ঞতা তো আছেই।

ওদিকে পাকিস্তান দলের জন্য বড় সুসংবাদ অভিজ্ঞ শোয়েব মালিক ও মোহাম্মদ হাফিজের ফিরে আসা। এছাড়া দলে বাবর আজম, আহসান আলী, ইফতিখার আহমেদরাও টি-টোয়েন্টিতে বেশ কার্যকর। এর মধ্যে আহসান আলী, আমাদ বাট, উসমান কাদিররা আছেন অভিষেকের অপেক্ষায়।  

অভিষেকের অপেক্ষায় আছেন স্পিনার হারিস রৌফও। কিছুদিন আগেই অস্ট্রেলিয়ার বিগ ব্যাশ লিগে হ্যাটট্রিক করে নজর কেড়েছেন এই স্পিনার। বোলিংয়ে হিসাব পাল্টে দিতে পারেন শাহিন শাহ আফ্রিদি, মোহাম্মদ হাসনাইনের মতো গতি তারকারা। শাদাব খানের স্পিনও দারুণ কার্যকর।

শেষ পাঁচ ম্যাচের সবগুলো হেরে খাদের কিনারায় চলে যাওয়া পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় তুলে নেওয়ার এটাই সেরা সময়। যদিও র‍্যাংকিংয়ের বিচারে পার্থক্য অনেক। পাকিস্তান যেখানে টি-টোয়েন্টি র‍্যাংকিংয়ের শীর্ষে, বাংলাদেশ সেখানে নবম স্থানে। তবে শেষ পাঁচ ম্যাচের ৩টিতে জয় পাওয়া বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাস তুলনামূলকভাবে বেশিই থাকার কথা।  

বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ: তামিম ইকবাল, মোহাম্মদ নাঈম, আফিফ হোসেন, লিটন দাস (উইকেটরক্ষক), মাহমুদউল্লাহ (অধিনায়ক), সৌম্য সরকার, মেহেদী হাসান, আমিনুল ইসলাম, শফিউল ইসলাম, মোস্তাফিজুর রহমান, আল-আমিন হোসেন।

পাকিস্তানের সম্ভাব্য একাদশ: আহসান আলী, বাবর আজম, মোহাম্মদ হাফিজ, শোয়েব মালিক, ইফতিখার আহমেদ, ইমাদ ওয়াসিম, মোহাম্মদ রিজওয়ান (উইকেটরক্ষক), শাদাব খান, হারিস রৌফ, শাহিন শাহ আফ্রিদি, মোহাম্মদ হাসনাইন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০২০
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।