চট্টগ্রাম: এক বছর ধরে বন্ধ রাউজান বিসিক শিল্পনগরের উন্নয়ন কাজ। হযরত গফুর আলী বোস্তামী এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শিল্পনগর ভরাট, সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, তোরণ নির্মাণ ও তিনতলা বিশিষ্ট অফিস ভবন নির্মাণকাজ করছিল।
২০২১ সালে একনেক সভায় অনুমোদিত এই শিল্পনগরের জন্য বরাদ্দ করা হয় প্রায় ৮০ কোটি টাকা।
বর্তমানে কাজ বন্ধ থাকায় চট্টগ্রাম–রাঙামাটি সড়কের পাশে ফাঁকা প্লটগুলো ঢাকা পড়েছে ঝোপঝাড়ে। একপাশের সীমানা প্রাচীর ধ্বসে গেছে। ভরাট করা মাটি সরে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে গর্ত। কয়েকজন আনসার সদস্য শিল্প এলাকার পাহারায় নিয়োজিত আছেন। ঠিকাদার জমির উদ্দিন না থাকলেও জুলাই মাসে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ বুঝিয়ে দিয়েছে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের। তবে এখনও জনবলও নিয়োগ হয়নি, বরাদ্দ দেওয়া হয়নি প্লট।
বিসিক সূত্রে জানা যায়, বিসিক শিল্পনগরের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা ছিল জনবল নিয়োগের মাধ্যমে। পাশাপাপশি লটারির মাধ্যমে ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের প্লট বরাদ্দ দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল কর্তৃপক্ষের। এ শিল্পনগর স্থাপনে ব্যয় ধরা হয় ৭৯ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। ১৮৪টি শিল্প প্লটে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ইউনিট স্থাপিত হবে। প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমের আওতায় ৩৫ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে ৩০ লাখ ২২ হাজার ঘনমিটার ভূমির উন্নয়ন, ৩৭৫ বর্গমিটার প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ, ৪৬ বর্গমিটার পাম্প ড্রাইভার কোয়ার্টার নির্মাণ করা হবে।
এছাড়াও অন্যান্য কার্যক্রমগুলো হচ্ছে- ২০ হাজার ৪১৫ বর্গমিটার অভ্যন্তরীণ সড়ক নির্মাণ, ৭১ হাজার মিটার ড্রেন নির্মাণ, ৫ দশমিক ৩২ কিলোমিটার বৈদ্যুতিক লাইন নির্মাণ, একটি ডিপ টিউবওয়েল স্থাপন, ২ দশমিক ৫ কিলোওয়াট সোলার প্যানেল, ২০টি কালভার্ট ক্রস ড্রেন, ১৮৪টি শিল্প স্থাপনের জন্য প্লট তৈরি। এ শিল্পাঞ্চল প্রস্তুত হলে পোশাক কারখানা, প্লাস্টিক কারখানা, খেলনা তৈরির কারখানাসহ কুটির শিল্পের বিভিন্ন কারখানায় বিপুল পরিমাণে রফতানিজাত পণ্য উৎপাদন করা যাবে।
বিসিক চট্টগ্রাম জেলার উপ-মহাব্যবস্থাপক এস এম এম আলমগীর আলকাদেরী বলেন, ‘রাউজান সদর ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব ও জঙ্গল রাউজান মৌজায় ৩৫ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এখানে ১৮৪টি শিল্প প্লট তৈরির কাজ শুরু হবে। জনবল সংকট ও রাজনৈতিক পালাবদলের কারণে কাজে কিছুটা ধীরগতি তৈরি হয়। এখন দ্রুত শিল্পনগর বাস্তবায়নে কাজ করছি’।
রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিসান বিন মাজেদ বলেন, ‘বিসিক শিল্পনগর প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে এ অঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আসবে। অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হবে’।
এসি/টিসি