ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

বুলগেরিয়া: ইউরোপের আলোর অপর পিঠ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১০
বুলগেরিয়া: ইউরোপের আলোর অপর পিঠ

সোফিয়া: পাইপলাইন ফুটো করে জ্বালানি তেল চুরি করা, আকাট মুর্খ লোককে ঋণগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদে বসানো ইত্যাদি জুয়োচুরি চলছে বুলগেরিয়ায়। রাষ্ট্রীয় অর্থ হাতিয়ে নিতে উদ্ভাবিত হয়েছে এরকম বহু সুনিপুণ উপায়।



যেমন, গত সপ্তাহেই রাজধানী সোফিয়ার এক-তৃতীয়াংশ অঞ্চল জুড়ে এক ঘণ্টার জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে গেল। জানা গেল, ৯ কিলোমিটার এলাকার বৈদ্যুতিক তার চুরি হয়ে গেছে।

চেক প্রজাতন্ত্রের সিইজেড নামের একটি সোফিয়ার বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি জানাচ্ছে, ১৭ হাজার মার্কিন ডলার সমমূল্যের তার চুরি হয়েছে। মেরামতসহ এর খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ছয় গুণ।

অর্থনীতি বিষয়ক পুলিশপ্রধান দারিনা অব্রেতেনোভা বার্তাসংস্থা এএফপিকে জানান, স্বাস্থ্যবীমা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঠকাতে নকল কোম্পানির জন্য ভুয়া কর্মকর্তা ভাড়া করার ব্যাপারটা খুব সাম্প্রতিক। দরিদ্র ও অশিতি লোকদের নামমাত্র বেতনে শীর্ষ পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এদের মধ্যে রয়েছে, রোমা সম্প্রদায়, মাদকাসক্ত ও এমনকি ভিুকরাও।

১৯৯১ সালে পূর্ব বলকান অঞ্চলের এ দেশটি কমিউনিস্ট শাসন থেকে বেরিয়ে বাজার অর্থনীতিতে প্রবেশ করে। যা এখন নিম্ন জীবনমান ও দুর্নীতির ব্যাধিতে আক্রান্ত।

অপরাধ ও দুর্নীতির স্তর বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সোফিয়াকে বারবার সতর্ক দিয়েছে। ২০০৭ সালে বুলগেরিয়ার সরকার দেশের এই অবস্থার কথা স্বীকার করে।

গত জুলাইয়ে ইউরোপীয় কমিশন দেশটির বিচার ব্যবস্থার সমালোচনা করে জানায়, ‘বুলগেরিয়ায় বিচার প্রক্রিয়ায় কোনো উদ্যোগ ও পেশাদারি সামর্থ্য নেই। এর কার্যপ্রণালী খুব বেশি আনুষ্ঠানিক ও দীর্ঘদিন ধরে চলে। প্রায় আদালতে তা ব্যর্থ হয়। ’

প্রধানমন্ত্রী বয়কো বরিসোভ ২০০৯ সালে মতারোহন করে দুর্নীতি বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অঙ্গীকার করেন। ইউরোপীয় কমিশন প্রথমবারের মতো স্বীকার করে সংগঠিত অপরাধ সক্রিয়ভাবে মোকাবিলা করা হচ্ছে বুলগেরিয়ায়।

সম্প্রতি চারজন পুলিশ সদস্যের সহায়তায় ধূর্ত একটি গোষ্ঠী বুর্গাস তেল শোধনাগারের পাইপলাইন ফুটো করে কয়েক টন জ্বালানি তেল বের করে নিয়েছে।

এরইমধ্যে ধাতব পদার্থের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ ও ফোন সংযোগের তার চুরি হচ্ছে। এমনও ঘটছে, পুরো একটি এলাকার বিদ্যুৎ ও টেলিফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে।

সরকারি রেলওয়ের প্রতিষ্ঠান অভিযোগ করেছে, রেল, তার, ট্রাফিক কনট্রোল ও বার্তা আদানপ্রদানের যন্ত্রপাতি চুরি হয়ে যাচ্ছে।

দুর্নীতি বিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের ২০০৯ সালের দুর্নীতি সূচকে বুলগেরিয়ার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে সংস্থাটি জানিয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নে বুলগেরিয়া ও রোমানিয়া সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দুটি দেশ।

বাংলাদেশ সময়: ১২২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।