ওয়েলিংটন: আগামী ২৫ বছরের মধ্যে বিলুপ্ত হয়ে যাবে প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকার মৎস্যসম্পদ। অতিরিক্ত মাছ ধরা, জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাবে এ এলাকার অন্যতম প্রধান অর্থনৈতিক সম্পদ বিলীন হয়ে যাবে।
সেক্রেটারিয়েট অব প্যাসিফিক কমিউনিটি (এসপিসি) নৌমি ভিত্তিক একটি সংগঠন এ গবেষণা প্রকাশ করেছে।
এসপিসি প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকার একটি আন্তঃসরকারি সংগঠন এবং বিভিন্ন রাষ্ট্র ও ভূখণ্ড উভয়ই এর সদস্য। এটা মূলত প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকার জনগণকে প্রযুক্তিগত, পেশাদার, বৈজ্ঞানিক, গবেষণা, পরিকল্পনা এবং ব্যবস্থাপনা সামর্থ্যরে যোগান দেয়। একইসঙ্গে ভবিষ্যৎ উন্নয়ন ও কল্যাণের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সরাসরি তাদের তথ্য ও পরামর্শ দিয়ে থাকে।
নিউ ক্যালেদোনিয়ার রাজধানী নৌমিতে এসপিসি’র সদরদপ্তর অবস্থিত। নিউ ক্যালেদোনিয়া মূলত ফ্রান্সের একটি ভূখণ্ড।
এসপিসি’র প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয় যে মৎস্য সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণে বছরে মাত্র ২ কোটি মার্কিন ডলার সংগ্রহ করা সম্ভব হয়। একইসঙ্গে এ এলাকার ২২টি দ্বীপের সমন্বয়ের ক্ষেত্রেও রয়েছে অনেক ঘাটতি।
এদিকে, কয়েক জাতের টুনা মাছ এরইমধ্যে বিপদজনকভাবে হুমকির মধ্যে পড়েছে বলে প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলা হয়।
এছাড়া বিভিন্ন প্রজাতির মাছের সমৃদ্ধ এ আবাসভূমিতে বিদেশি নৌবহরের প্রবেশাধিকার এসব এলাকার মৎস্যসম্পদকে হুমকির মধ্যে ফেলছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘এ সম্পদ অফুরন্ত বলে সবসময় একটা বিপদজনক ভুল ধারণা থাকলেও এটা সত্যি নয়। এখনই অবস্থার পরিবর্তন না করা হলে সামনের পথ হবে হতাশাজনক। ’
এদিকে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রবাল মৎস্যসম্পদ হুমকির মধ্যে আছে বলে গবেষণায় উল্লেখ করা হয়। আর এটা শুধু মাছের মজুদ নয় বরং একইসঙ্গে প্রবাল প্রাচীরকেও হুমকির মধ্যে ফেলছে।
উল্লেখ্য, এসব প্রবাল প্রাচীর বহু প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ দেশের পর্যটক আকর্ষণের অন্যতম প্রধান মাধ্যম।
এদিকে, এ এলাকার দ্বীপ দেশের জনসংখ্যা আগামী ২০৩৫ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশ বেড়ে দেড় কোটি হবে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এসব এলাকায় মাছের চাহিদা বাড়বে, যা মৎস্যসম্পদের বিলুপ্তির প্রধান কারণ হয়ে দেখা দেবে।
গবেষণায় বলা হয়, ‘প্রশান্ত মহাসাগরের মৎস্যসম্পদ এ এলাকার খাদ্য নিরাপত্তা, জীবিকা ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ নবায়নযোগ্য সম্পদ। ’
এতে আরও বলা হয়, ‘এ অবস্থায় মৎস্যসম্পদের ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি না হলে আগামী ২৫ বছরের মধ্যে অনেক মৎস্যসম্পদ বিলুপ্ত হয়ে যাবে। একইসঙ্গে কৌশলগত পদক্ষেপ নেওয়া না হলে গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সুবিধাদি ব্যর্থ হবে। ’
বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের মধ্য দিয়ে আরও বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে মাছের মজুদ বাড়ানো সম্ভব। একইসঙ্গে আঞ্চলিক সহযোগিতা মহাসাগরীয় এলাকায় নিরবিচ্ছিন্ন মৎস্য উৎপাদন নিশ্চিত করবে বলেও গবেষণায় বলা হয়।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময়: ১২:৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১০