ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

সুনামি: প্রত্যন্ত এলাকায় ত্রাণ পৌঁছানো যাচ্ছে না, নিহতের সংখ্যা ৪০০ ছাড়িয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১০
সুনামি: প্রত্যন্ত এলাকায় ত্রাণ পৌঁছানো যাচ্ছে না, নিহতের সংখ্যা ৪০০ ছাড়িয়েছে

উত্তর পাগাই: ইন্দোনেশিয়ার প্রত্যন্ত এলাকায় ত্রাণ পৌঁছাতে হিমশিম খাচ্ছেন দেশটির কর্তৃপক্ষ। সুনামিতে নিহতের সংখ্যা ৪০০ ছাড়িয়ে গেছে।

সাগর সৈকতে এবং ধ্বংসস্তুপের মধ্যে মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে।  

সুনামির পর ঢেউয়ের তোড়ে অনেকে সাগরে ভেসে যাওয়ায় নিহতের সংখ্যা ৫০০ ছাড়াতে পারে বলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন। নিখোঁজের তালিকায় এখনো ৩০৩ জনের নাম রয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা অ্যাগুস প্রায়েতনো জানান, ঢেউয়ের তোড়ে ওই এলাকার অধিকাংশ গ্রাম ও ঘরবাড়ি ভেসে গেছে। নিখোঁজদের বেঁচে থাকা নিয়ে আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে।

৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পের পর সুমাত্রার পশ্চিম উপকূলের মেনতাভি দ্বীপে সোমবার সুনামিটি আঘাত হানে।

প্রায় ১৩ হাজার মানুষ বর্তমানে দ্বীপটির অস্থায়ী আশ্রয় শিবিরে বসবাস করছেন।

এদিকে খারাপ আবহাওয়ার কারণে সবচেয়ে কাছের  পাদাং বন্দর থেকেও নৌকায় তাবু, ওষুধ, খাবার ও পানি নিয়ে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

একইসঙ্গে ইন্দোনেশিয়া ওই এলাকায় সেনাবাহিনী ও পাঁচটি যুদ্ধ জাহাজ পাঠানোর ব্যবস্থা করে। কিন্তু সড়ক ও বেতার যোগাযোগের অনুপযোগী সবচেয়ে বিচ্ছিন্ন এ এলাকার জন্য হেলিকপ্টার ও নৌকার প্রয়োজন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ওয়ার্ল্ড ভিশন ইমার্জেন্সি রেসপন্সের পরিচালক জিমি নাদাপদা বলেন, ‘সোমবার থেকে আমাদের সাহায্যকারীরা প্রত্যন্ত ওই এলাকায় যাওয়ার জন্য পাদাং এ অপেক্ষা করছে। ’  

এদিকে দেশটির জাভা দ্বীপের মাউন্ট মেরাপির আগ্নেয়গিরিতে দ্বিতীয় দফার লাভা ও ছাইয়ের উদগিরণ শুরু হয়। ফলে বাড়ি ফিরে যাওয়া বাসিন্দাদের জন্য তা নতুন করে হুমকির কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে।

আগ্নেয়গিরিবিদ হেরু সুপারওকো বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘আগ্নেয়গিরি থেকে স্থানীয় সময় সকাল প্রায় সোয়া ছয়টায় দুই মাইল দূরের দক্ষিণপূর্ব ঢালে উত্তপ্ত মেঘ দেখা দেয় ও ছাই বৃষ্টি হয়। ’

এলাকা ত্যাগের নির্দেশ অমান্য করা এবং গবাদি পশু ও সম্পদের জন্য এলাকায় ফিরে যাওয়াদের জন্য এ মেঘ বিপদজনক বলেও সতর্ক করে দেন তিনি।

অগ্ন্যুৎপাতের কারণে এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার বাসিন্দা এলাকা ত্যাগ করেন। কিন্তু এখনও সেখানেই অবস্থান করা ও ফিরে যাওয়া বাসিন্দাদের নিয়ে কর্তৃপক্ষের মধ্যে হতাশা দেখা দেয়।  

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগ কেন্দ্রের প্রধান মুধজিহারতো বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘লোকজনকে পরিস্থিতির গুরুত্ব বোঝানো কঠিন হয়ে পড়েছে। ’

মঙ্গলবার প্রথম দফার অগ্ন্যুৎপাতে ৩৪ জন নিহত হন।

এদিকে ইন্দোনেশিয়া প্রাথমিকভাবে সব ধরনের বিদেশী সাহায্য প্রত্যাখান করে। কিন্তু উভয় দুর্যোগের জন্য জাকার্তা এক লাখ ডলার গ্রহণ করেছে বলে বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলিয়া ঘোষণা দেয়।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও এশিয়ার বেশ কিছু দেশও সাহায্যের প্রস্তাব দিয়েছে।

ইউরোপীয় কমিশন ২০ লাখ ডলার সাহায্যের প্রস্তাব দিয়েছে এবং জাতিসংঘ সাহায্য করতে প্রস্তুত বলে সংস্থাটির মহাসচিব বান কি-মুন জানান।

ইন্দোনেশিয়া দ্বীপপুঞ্জে বেশ কয়েকটি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি আছে। একইসঙ্গে প্রশান্ত মহাসাগর থেকে ভারতীয় মহাসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত দ্বীপটি অনেকগুলো টেকটোনিক প্লেটের মধ্যে পড়েছে। একে সাধারণত ‘রিং অব ফায়ার’ বলা হয়।

বাংলাদেশ স্থানীয় সময়: ১৩০৩ ঘন্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।