ওয়াশিংটন: মিল্কিওয়ে নামের ছায়াপথে বিদ্যমান সূর্যের মত উজ্জ্বল চারটি নক্ষত্রের মধ্যে একটিকে ঘিরে পৃথিবীর আকৃতির কয়েকটি গ্রহের সন্ধান পাওয়া গেছে। জ্যোতির্বিদ্যা সংক্রান্ত এক গবেষণা থেকে বৃহস্পতিবার এসব তথ্য জানাগেছে।
নাসার অর্থায়নে ও ক্যালিফোর্নিয়ার বার্কলি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহায্যে সবচেয়ে ব্যয়বহুল এ গবেষণা পরিচালিত হয়। শুক্রবারের বিজ্ঞান বিষয়ক জার্নালে গবেষণাটি প্রকাশিত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপগবেষক জেওফ মার্সি বলেন, ‘আমাদের ছায়াপথে বিদ্যমান ২০ হাজার কোটি নক্ষত্রের মধ্যে অন্তত ৪ হাজার ৬০০ কোটি পৃথিবীর আকৃতির গ্রহ রয়েছে। এর মধ্যে নিজস্ব নক্ষত্র থেকে দূরের কক্ষপথে অবস্থিত পৃথিবীর আকৃতির গ্রহগুলো বসবাসের উপযোগী। ’
আমাদের সৌর জগতের কাছে ১৬৬টি সূর্যের মত নক্ষত্রের সন্ধানে জ্যোতির্বিদরা পাঁচ বছর হাওয়াইয়ের ডব্লিউ.এম কেক মানমন্দির থেকে গবেষণা পরিচালনা করেন। এসময় তারা মূলত পৃথিবীর ভরের তুলনায় তিন থেকে এক হাজার গুণ বেশি ভরের গ্রহের সন্ধান করেন।
গবেষণার ফলাফলে বড় গ্রহের তুলনায় অনেক ছোট গ্রহের সন্ধান পাওয়া যায়।
ক্যালিফোর্নিয়ার বার্কলি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গবেষক অ্যান্ড্রু হাওয়ার্ড বলেন, ‘আমরা শিলাখন্ড, পাথরের স্তূপ, নুড়ি ইত্যাদি বিভিন্ন ভরের গ্রহের সন্ধান করেছি। এক্ষেত্রে আমরা শিলাখন্ডের তুলনায় অনেক পাথর এবং পাথরের তুলনায় অনেক নুড়ি পেয়েছি। ’
‘আমরা বালুকা কণার থেকে ক্ষুদ্র এ গ্রহগুলো দেখতে না পারলেও এর সংখ্যা হিসেবে করতে পেরেছি। আমাদের ছায়াপথে পৃথিবীর সমান গ্রহগুলো সমুদ্র সৈকতের বালুর মত ছড়িয়ে আছে এবং এগুলো সব জায়গায় আছে। ’
একইসঙ্গে পৃথিবীর মত বসবাস উপযোগী গ্রহ মিল্কিওয়েতে আছে বলেও গবেষণায় উল্লেখ করা হয়।
ছোট এ গ্রহগুলোর কক্ষপথ এগুলোর নক্ষত্র থেকে অনেক দূরে হওয়ায় গ্রহের তাপমাত্রা প্রাণের বেঁচে থাকার উপযোগী।
গবেষণায় মধ্যম ভরের আরও ৬ দশমিক ৫ শতাংশ নক্ষত্রের সন্ধান পাওয়া যায় যেগুলোর ভর পৃথিবীর ভরের তুলনায় ১০ থেকে ৩০ গুণ বেশি। একইসঙ্গে এ গ্রহগুলোর সঙ্গে নেপচুন ও ইউরেনাসের সাদৃশ্য রয়েছে।
এছাড়া পৃথিবীর তুলনায় তিন থেকে ১০ গুণ বেশি ভরের ১১ দশমিক ৮ শতাংশ ‘সুপার-পৃথিবীর’ সন্ধান পাওয়া যায়।
গবেষণায় দেখা যায় যে ছায়াপথে ২৩ শতাংশ সূর্যের মত নক্ষত্রই পৃথিবীর মত ছোট গ্রহ ধারণ করে।
দ্য ন্যাশনাল এরোনাইটিকস অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিন্সিট্রেসনের কেপলের মহাকাশ যান ছায়াপথে একই ধরনের আরেকটি গবেষণা পরিচালনা করছে এবং আগামী কয়েক বছরের মধ্যে সত্যিকার পৃথিবীর মতো গ্রহ আবিষ্কার করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময়: ১৩৩৪ ঘন্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১০