স্বাধীনতার ২৫০ বছর পূর্তির প্রাক্কালে নতুন এক বিক্ষোভের সাক্ষী হলো আমেরিকা। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক নীতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানাতে শনিবার (১৯ এপ্রিল) যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি রাজ্যেই রাজপথে নেমে এলেন হাজার হাজার মানুষ।
আন্দোলনের প্রতীকী নাম ছিল— ‘৫০৫০১’। ৫০টি অঙ্গরাজ্যে ৫০টি বিক্ষোভ, কিন্তু লক্ষ্য একটাই: ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ।
এদিন হোয়াইট হাউস থেকে শুরু করে টেসলার শোরুম পর্যন্ত, শহরের কেন্দ্রে কেন্দ্রে বিক্ষোভের ঢেউ উঠেছিল। হাতে ছিল 'নো কিংস' লেখা পোস্টার — যা আমেরিকান বিপ্লবের সময় রাজতন্ত্রবিরোধী প্রতীক, যা নতুন করে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রতিধ্বনিত হলো।
এই বিক্ষোভের প্রধান ইস্যু ছিল ট্রাম্পের অভিবাসননীতি। বিশেষ করে এল সালভাদরে নির্বাসিত কিলমার আবরেগো গার্সিয়াকে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরানোর দাবিতে সরব হন বিক্ষোভকারীরা। মানবাধিকার ও ন্যায়বিচারের প্রশ্নে প্রশাসনের অনীহা আরও ঘনীভূত করে সাধারণ মানুষের অসন্তোষ।
একই দিনে প্রকাশিত গ্যালাপ জরিপের ফলাফল আন্দোলনকারীদের ক্ষোভের আভাস দেয়। জরিপ বলছে, ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা নেমে এসেছে ৪৫ শতাংশে, যেখানে তার প্রথম মেয়াদের শুরুতে ছিল ৪৭ শতাংশ। ইতিহাস বলছে, ১৯৫২ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত আমেরিকার প্রেসিডেন্টদের গড় প্রথম কোয়ার্টার জনপ্রিয়তা ছিল ৬০ শতাংশের আশেপাশে। এই পতন ট্রাম্পের জনসমর্থনে স্পষ্ট ভাটার ইঙ্গিত দেয়।
বিক্ষোভকারীরা আরও প্রতিবাদ জানান 'ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি (ডিওজিই)' প্রকল্পের বিরুদ্ধে, যা সরকারি ব্যয় কমানো ও চাকরি ছাঁটাইয়ের লক্ষ্যে গঠন করা হয়েছে। তাদের মতে, এটি আমেরিকান শ্রমিকদের জন্য এক ভয়ানক সংকেত।
বিক্ষোভের বেশিরভাগ অংশ শান্তিপূর্ণ হলেও কিছু জায়গায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা ঘটে যখন ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যান সুহাস সুব্রামানিয়াম এক ট্রাম্প-সমর্থকের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। সেই মুহূর্তের ভিডিও দ্রুত সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়, বিক্ষোভের উত্তাপ আরও বাড়িয়ে তোলে।
আন্দোলনকারীরা হয়তো আমেরিকার রাজনীতির মেরুকরণ কমাতে পারবেন না, কিন্তু ৫০ রাজ্যে একযোগে তাদের গর্জন স্পষ্ট করে দিল — মার্কিন জনগণের কণ্ঠকে আর উপেক্ষা করা যাবে না।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০২৫
এমএম