ইসরায়েলের সঙ্গে হামলা-পাল্টা হামলার মাঝে তেহরান হরমুজ প্রণালী অবরোধের প্রস্তুতি নিয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সূত্রের বরাতে একপ্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয় হামলা-পাল্টা হামলার মাঝে জুনে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা জানতে পারে যে ইরান পারস্য উপসাগরে তাদের নৌযানে সামুদ্রিক মাইন লোড করেছে। এই খবর ওয়াশিংটনে উদ্বেগ সৃষ্টি করে যদিও পরে এই মাইনগুলো ব্যবহৃত হয়নি।
যেহেতু বিশ্বজুড়ে জ্বালানি সরবরাহের প্রায় ২০ শতাংশ এই প্রণালী দিয়ে যায় তাই এই প্রস্তুতির খবর অঞ্চলজুড়ে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারত এবং বৈশ্বিক তেল ও গ্যাস সরবরাহ মারাত্মকভাবে ব্যাহত করতে পারত।
২২ জুন মার্কিন বাহিনী ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানোর পর, ইরানের পার্লামেন্ট হরমুজ প্রণালী বন্ধের একটি প্রস্তাব পাস করে। যদিও এটি বাধ্যতামূলক ছিলনা এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ইরানের সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের উপর নির্ভর করতো।
তবে একটি বিষয় এখনো পরিষ্কার নয়, তাহলো ইরান সত্যিই প্রণালীটি বন্ধ করতে চেয়েছিল, নাকি মাইন ব্যবহার যুক্তরাষ্ট্রকে ধোঁকা দেওয়ার কৌশল ছিল।
বাহরাইনে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম নৌবহরের মূল দায়িত্ব হলো এ অঞ্চলের বাণিজ্যিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সাধারণত এ বহর চারটি মাইন পরিষ্কারকারী (এমসিএম) জাহাজ মোতায়েন রাখে। ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার আগে সম্ভাব্য প্রতিশোধমূলক আক্রমণের আশঙ্কায় বাহরাইন থেকে সব মাইন পরিষ্কারকারী জাহাজ সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা বলেন, প্রেসিডেন্টের দক্ষ নেতৃত্বে পরিচালিত অপারেশন ‘মিডনাইট হ্যামার’ (যেখানে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়), হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সফল অভিযান এবং ইরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের কৌশলের ফলে হরমুজ প্রণালি এখন উন্মুক্ত রয়েছে। সেখানে অবাধ নৌ চলাচল নিশ্চিত হয়েছে এবং ইরান উল্লেখযোগ্যভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি। জাতিসংঘে ইরানের মিশন থেকেও কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
হরমুজ প্রণালীর প্রস্থ মাত্র ২১ মাইল, কিন্তু সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, কাতার এবং ইরানসহ উপসাগরীয় দেশগুলোর তেলের প্রধান রপ্তানি পথ এটি। ইরানের কাছে প্রচুর পরিমাণে নৌ মাইন মজুত রয়েছে এবং এগুলো দ্রুত মোতায়েন করার সক্ষমতাও আছে।
পরে মার্কিন হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান শুধু কাতারে একটি মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে, তবে ভবিষ্যতে ইরানের পক্ষ থেকে আরও পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে বলে মার্কিন কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন।
এমএম