ঢাকা, রবিবার, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ০১ জুন ২০২৫, ০৪ জিলহজ ১৪৪৬

সারাদেশ

জনগণের ক্ষমতা-মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় লড়াই করছে এনসিপি: সারজিস আলম

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২:৪৬, মে ৩১, ২০২৫
জনগণের ক্ষমতা-মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় লড়াই করছে এনসিপি: সারজিস আলম এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম

গাইবান্ধা: দেশের প্রকৃত মালিক জনগণের প্রত্যাশিত ক্ষমতা-মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) এনসিপি লড়াই করে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।

শুক্রবার (৩০ মে) দিনগত রাত ১০টার দিকে গাইবান্ধার পলাশবাড়ী পৌরশহরের চারমাথা মোড়ে আয়োজিত পথসভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে জনগণ সব ক্ষমতার উৎস্য হলেও সর্বক্ষেত্রে আজ তারা উপেক্ষিত- অবহেলিত। এ ধারাবাহিক সংস্কৃতির পরিবর্তন ঘটাতে চায় এনসিপি। যাতে জনগণের ভোটে নির্বাচিতরা শাসকের স্থলে শোষক হয়ে উঠতে না পারে। বরং তারা জনগণের সহযোদ্ধা হিসেবে কাজে আত্মনিয়োগ করে।  

তিনি আরও বলেন, বিগত সময়গুলোতে এদেশে নেতার পেছনে জনগণের ধরনা দেওয়ার যে রীতি এটা কোনো গণতান্ত্রিক দেশে  থাকতে পারে না। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এমন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখে যেখানে জনগণ নেতার পিছনে না ঘুরে নেতারাই জনগণের পিছনে ঘুরে।  

সে লক্ষে জনগণ তার এলাকার রাস্তাঘাট, মসজিদ-মন্দির, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ যাবতীয় সমস্যা সমাধানে নেতার পেছনে ধরনা দেবে না। বরং আগামীর বাংলাদেশে যারা নেতা হতে চাইবে, তাদের জনগণের রাস্তাঘাট, অফিস-আদালত, যাবতীয় অবকাঠামো নিজে ঘুরে ঘুরে দেখে উন্নয়ন কার্যক্রমে অংশ নিতে হবে।

দেশের প্রতিটি মানুষের কাছে এ বার্তা পৌঁছে প্রতিটি উপজেলায় যাচ্ছে এনসিপি।  

আগামী নিবাচনে দল বা মার্কা দেখে ভোট না দিয়ে যিনি জনগণের সহযোদ্ধা হয়ে এলাকার উন্নয়নে কাজ করবেন এমন মানুষকেই ভোট দিয়ে নির্বাচিত করার আহ্বান জানান তিনি।

পথসভায় সারজিস আলম ছাড়াও আরও বক্তব্য রাখেন, এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির মুখ্য সংগঠক ডা.মাহমুদা মিতু, নাজমুল হাসান সোহাগ, সদস্য ফিহাদুর রহমান দিবস।

এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গাইবান্ধা জেলার সাত উপজেলা সফরের শুরুতে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার চৌরাস্তায় আয়োজিত পথসভায় বক্তব্য দেন সারজিস আলম।

সেখানে তিনি বলেন, আমরা দেশের সব পর্যায়ের মানুষের দুঃখ, দুর্দশার কথা শুনছি। সারাদেশে দ্রব্যমূল্যের সিন্ডিকেট করে খেটে খাওয়া এসব মানুষের অবস্থা নাভিশ্বাস করে তুলছে। খেটে খাওয়া মানুষের যে আয় করে তা দিয়ে সংসার চলে কিনা তা জানার চেষ্টা  করছি। আমরা মানুষের চাওয়া-পাওয়ার ওপর ভিত্তি করেই আগামীতে নাগরিক পার্টি ইশতেহার ঘোষণা করবে।  

গাইবান্ধা জেলা দীর্ঘদিনের উন্নয়ন বঞ্চনার কথা তুলে ধরে সারজিস আলম বলেন, এ জেলায় শিক্ষা, স্বাস্থ্যের উন্নয়নের পাশাপাশি অন্যতম দাবি হচ্ছে গোবিন্দগঞ্জে ইপিজেড বাস্তবায়ন। ইপিজেড বাস্তবায়ন হলে গাইবান্ধার জেলার ভাগ্য পরিবর্তন হতে পারে। তবে ইপিজেড হওয়ার জন্য সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলের নেতাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকতে হবে। ইপিজেড বাস্তবায়নে যদি রাজনৈতিক দলের নেতাদের কামড়া-কামড়ির কারণে ইপিজেড বাধা হয়ে দাঁড়ায় তাহলে আপনারা ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের প্রতিহত করবেন। এনসিপি গাইবান্ধার মানুষের প্রাণের দাবির কণ্ঠস্বর হয়ে কাজ করবে।

সারজিস আলম আরও বলেন, উত্তরের কৃষককে সিন্ডিকেট করে জিম্মি করা হয়। কৃষকের ফসল রাখার মতো পর্যাপ্ত হিমাগার নেই। অল্প যা কিছু হিমাগার আছে সেখানেও সিন্ডিকেট করে কৃষকদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। যেহেতু উত্তরের কৃষি আর সবুজ শিল্পায়নে ভরপুর। সে কারণে গোবিন্দগঞ্জ কিংবা উত্তরাঞ্চলকে নিয়ে যেন কৃষিতে একটি মডেল রোড ম্যাপ তৈরি করতে হবে।

এ পথসভা শেষে জেলার সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়া ও ফুলছড়ি উপজেলার কালিরবাজার এলাকায় পথসভায় অংশ নেন সারজিস। এরপর সদর উপজেলায় এনসিপির আয়োজিত পৌরপার্ক শহীদ মিনারে পথসভায় যোগ দেন সারজিস। সেখান থেকে রাতে পলাশবাড়ীতে পথসভা শেষে সাদুল্লাপুর উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বর এবং সুন্দরগঞ্জ উপজেলার স্বাধীনতা চত্বরে পথসভায় অংশ নেওয়াসহ লিফলেট বিতরণে যাত্রা করেন সারজিস।

সারজিস আলমের সঙ্গে এসব পথসভা ও গণসংযোগে অংশ নেয় এনসিপি'র গাইবান্ধা জেলা-উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাইবান্ধা জেলা নেতারাও সারজিসকে শুভেচ্ছা জানান। পাশাপাশি সারজিসের এসব পথ সভায় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অংশ নেন।


জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।