ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২, ০৮ জুলাই ২০২৫, ১২ মহররম ১৪৪৭

সারাদেশ

সিলেটে ৬ দফা দাবিতে পরিবহন শ্রমিকদের কর্মবিরতি মঙ্গলবার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২:৪৯, জুলাই ৭, ২০২৫
সিলেটে ৬ দফা দাবিতে পরিবহন শ্রমিকদের কর্মবিরতি মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনাচ্ছেন সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন বাস-মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ময়নুল ইসলাম।

সিলেট: ছয় দফা দাবি আদায়ে আগামী মঙ্গলবার (৮ জুলাই) অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘট ডেকেছে সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।

সোমবার (৭ জুলাই) সন্ধ্যায় সিলেটে একটি অভিজাত হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মবিরতি ঘোষণা দেওয়া হয়।

সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন বাস-মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ময়নুল ইসলাম এ ঘোষণা দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান।  

এতে বলা হয়, সিলেটের গণপরিবহন-পণ্যপরিবহন ও পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মালিক শ্রমিকরা ফ্যাসিস্ট সরকারের আমল থেকেই বিভিন্নভাবে বঞ্চিত। আওয়ামী সরকারের মদদপুষ্ট একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটের রোষানলে পড়ে সিলেটের কোটি মানুষের মধ্যে অবর্ননীয় দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে।   ২০১৮ সালে বন্ধ করে দেওয়া হয় সিলেটের সব পাথর কোয়ারি। বর্তমানে লাখ লাখ কর্মহীন মানুষের কারণে দুর্ভিক্ষাবস্থা বিরাজ করছে এ অঞ্চলে।  

অন্যদিকে রিজার্ভের বিলিয়ন ডলার খরচ করে বিদেশ থেকে পাথর আমদানি করা হচ্ছে। তারা পাথর কোয়ারি খোলে দেওয়ার দাবিতে বারবার আন্দোলন সংগ্রাম করে ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। কিন্তু ৫ আগস্টের পরেও তারা জুলুম নির্যাতন ষড়যন্ত্র থেকে রেহাই পাননি।  

সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এর ৩৬ ধারায় যে প্রজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে, তা মালিক-শ্রমিককে ধ্বংসের নীলনকশা দাবি করে ময়নুল ইসলাম দাবি করেন, একইভাবে গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া আরেক হয়রানি ও ষড়যন্ত্র। তাছাড়া গাড়ি তল্লাশির নামের পুলিশ ট্রাক শ্রমিকদের প্রতিনিয়ত হয়রানি করছে। এসব কারণে সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন বাস-মিনিবাস, কোচ-মাইক্রোবাস, ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান, সিএনজি, ইমা-লেগুনা ও পাথর সংশ্লিষ্ট মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ ছয় দফা দাবিতে আগামী মঙ্গলবার সকাল ছয়টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সিলেট জেলাজুড়ে পরিবহন কর্মবিরতি (ধর্মঘট) আহ্বান করেছে।

সভাপতি ময়নুল ইসলাম জানান, আমরা পুলিশ কমিশনার, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।

তাদের দাবিগুলো, সড়ক পরিবহন আইন ২-১৮এর ৩৬ ধারা প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার বাস মিনিবাসের ক্ষেত্রে ২০, ট্রাক পিকআপ কাভার্ডভ্যানের ক্ষেত্রে ১৫ ও সিএনজি ইমা ও লেগুনার ক্ষেত্রে ১৫ বছর ইকোনোমিক লাইফ নির্ধারণ করার প্রজ্ঞাপন বাতিল, সিলেটের সব পাথর কোয়ারির ইজারা স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার ও সনাতন পদ্ধতিতে বালু মহাল এবং পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়া, বিআরটিএ কর্তৃক গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট প্রদানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ছাড়পত্র বাতিল ও গণপরিবহনের ওপর আরোপিত বর্ধিত ট্যাক্স প্রত্যাহার, সিলেটের সব ক্রাশার মিলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ বন্ধ, বৈদ্যুতিক মিটার ফেরত ও ভাঙচুরকৃত মিলের ক্ষতিপূরণ এবং গাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া পাথর-বালুর ক্ষতিপূরণ, সিলেটের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদকে প্রত্যাহার এবং বালু পাথরসহ পণ্যবাহী গাড়ির চালকদের হয়রানি না করা। এ দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন।  

সংবাদ সম্মেলনে সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রহিমসহ পরিবহনখাত সংশ্লিষ্ট সব সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।  

এনইউ/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।