ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২, ১৫ জুলাই ২০২৫, ১৯ মহররম ১৪৪৭

সারাদেশ

জুলাইগাথা

এখনও থামেনি স্বজনদের কান্না, দোষীদের দ্রুত বিচার দাবি

আব্দুর রহমান, ডিস্ট্রিস্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২:৪৯, জুলাই ১৫, ২০২৫
এখনও থামেনি স্বজনদের কান্না, দোষীদের দ্রুত বিচার দাবি শহীদ রমজানের মা এবং রমজান

বাংলাদেশের এক ইতিহাসের নাম ‘জুলাই বিপ্লব’। ছাত্র-জনতা এক হয়ে দেশ থেকে ফ্যাসিবাদ হঠিয়ে সৃষ্টি করে নতুন বাংলাদেশ।

সেই আন্দোলনে শহীদ হয়েছিলেন নেত্রকোনার ১৭ তাজা প্রাণ। আহত হন প্রায় দুইশ সাধারণ মানুষ।  

এক বছর হয়ে গেলেও কান্না থামেনি এই শহীদ পরিবারগুলোর। তারা চায় সন্তানের রক্ত যেন বৃথা না যায়। চায় দ্রুত বিচার ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি। তবে তাদের পাশে প্রশাসন রয়েছে বলেও জানান জেলা প্রশাসক।

দরজার পাশে দাঁড়িয়ে ছেলের কথা মনে করে অপলক চোখে কাঁদেন নেত্রকোনা সদর উপজেলার চরপাড়া নন্দীপুর গ্রামের রমজানের মা। মন থেকে ছেলের স্মৃতি মুছতে পারছেন না। জুলাই বিপ্লবে যোগ দিয়ে শহীদ হয়েছেন তার ছেলে। পরিবারের অভাব ঘোচাতে মাত্র ৫ বছর আগে ঢাকায় পাড়ি দিয়েছিলেন। সেখানে আকিজ গ্রুপে শ্রমিকের কাজ করতেন রমজান। ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই—ঢাকা রামপুরায় ‘জুলাই বিপ্লব’ কর্মসূচিতে ছাত্র-জনতার মিছিলে অগ্রণী ভূমিকা নেন তিনি। হঠাৎ গলায় ও বুকে পুলিশের গুলি লাগে। সহযোদ্ধারা তাকে হাসপাতালে নিতে দৌঁড়ায় একের পর এক, কিন্তু কোথাও চিকিৎসা মেলেনি। একপর্যায়ে সহযোদ্ধার কোলেই ঢলে পড়েন তিনি। রমজানের লাশ ফিরে আসে গ্রামের বাড়িতে। দাফন হয়। কিন্তু দাফন হয় না মায়ের কান্না, বাবার বুকফাটা চিৎকার।  


শুধু তিনিই নন, জেলার বারহাট্টা, কলমাকান্দা, দুর্গাপুর, কেন্দুয়া, আটপাড়ার আরও ১৬ জন জুলাই বিপ্লবে মর্মান্তিভাবে শহীদ হন। ৫ আগস্ট ঢাকার মিছিল থেকে আর ফেরা হয়নি তাদের। বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করছেন নিহতদের পরিবারের লোকজন। দোষীদের দ্রুত বিচার দাবি করেছেন তারা।

নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস বলেন, নেত্রকোনাতে ১৭ জন শহীদ হয়েছেন এবং ১৭ জন শহীদ পরিবারেই সরকারি আর্থিক সুযোগ-সুবিধা পেয়েছে। সর্বশেষ সরকার থেকে ১০ লাখ টাকা সঞ্চয়পত্র দিয়েছি আমরা।

এর মাঝে কাউকে দেওয়া হয়েছে জায়গা আবার বসতঘরসহ আর্থিক সহায়তা।  

এছাড়াও সরকারি যত সহযোগিতা আছে তাদের জন্য আমরা সব সময়, সময় মতো পৌঁছে দিচ্ছি।

জুলাই বিপ্লবে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ১৭ জন নিহত এবং ১৯২ জন আহত হয়েছেন।

আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।